Rare Disease: জুটছে না চিকিৎসা! নাম ওঠেনি এই পোর্টালে, বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫ বছরের সোহান এখন শুনতে পাচ্ছে না কানে
Rare Disease: সোহান ইসলাম একা নয়। বিরল রোগে আক্রান্ত অনেকের নাম পোর্টালে ওঠেনি। বিরল রোগের নীতি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এ রাজ্যের কো-অর্ডিনেটর দীপাঞ্জনা দত্তের বক্তব্য, "বিরল রোগগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, গ্রুপ ওয়ান, গ্রুপ টু, গ্রুপ থ্রি। এ রাজ্যে পোর্টালে নথিভুক্ত ২৭৯ জনের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রুপ থ্রির অন্তর্গত। তাতেও সকলে যে নিয়মিত চিকিৎসা পাচ্ছেন তা নয়।"

কলকাতা: বিরল রোগে আক্রান্ত। কিন্তু, ২ বছর অপেক্ষার পর বিরল রোগের পোর্টালে নাম ওঠেনি। চিকিৎসা না পেয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপার বছর পাঁচেকের সোহান ইসলাম বধির হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, হান্টার সিনড্রোমে আক্রান্ত সোহানের দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা শুরু না হলে বিপদ বাড়বে একরত্তি শিশুর। এই পরিস্থিতিতে ছেলের চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছেন সোহানের বাবা-মা।
বিরল রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য শীর্ষ আদালতের নির্দেশে একটি নীতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নীতি অনুযায়ী সারা দেশে ১২টি সরকারি হাসপাতালকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাবা-মায়ের আবেদনের ভিত্তিতে আক্রান্তের রোগ সত্যিই বিরল কি না, তা ঠিক করে উৎকর্ষ কেন্দ্রের মেডিক্যাল বোর্ড।
মেডিক্যাল বোর্ডের শংসাপত্র থাকলে আক্রান্তের নাম বিরল রোগের পোর্টালে নথিভুক্ত করা হয়। চিকিৎসার জন্য রোগী পিছু ৫০ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা উৎকর্ষ কেন্দ্রগুলির। সারা দেশে এ পর্যন্ত ৩০০৬ জন রোগীর নাম নথিভুক্ত রয়েছে। বিরল রোগের চিকিৎসায় পূর্ব ভারতের উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসাবে রয়েছে এসএসকেএম-র নাম।
এই খবরটিও পড়ুন




রোগীদের চিকিৎসার জন্য গত পাঁচ বছরে এসএসকেএম পেয়েছে ১৪ কোটি টাকা। এসএসকেএমের পোর্টালে নথিভুক্ত রোগীর সংখ্যা মাত্র ২৭৯। সেই ২৭৯ জনের তালিকায় নাম নেই সোহান ইসলামের।

বাবার কোলে সোহান
ছেলের চিকিৎসা না হওয়া নিয়ে সোহানের বাবা বলেন, “আমি অনেকবার জিজ্ঞাসা করেছি, স্যার আমরা কি ওষুধ পাব না? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফান্ড ঢুকছে না। তারপর বলল, দিল্লিতে চিঠি পাঠাতে হবে। আমরা দিল্লিতে চিঠিও পাঠিয়েছি। সেখান থেকে কোনও জবাব আসেনি। ওষুধ পেলে আমার সোহান সুস্থ হয়ে যেত। অন্য বাচ্চার মতো সোহান আমার কোলে খেলে বেড়াত।” সোহানের বাবার অভিযোগ, এসএসকেএম থেকে কোনও সুরাহা পাইনি। সোহানের মা বলেন, “সবার মতো ছেলে ইস্কুলে যেতে চায়। সেটা পারে না। মা হয়ে তো কষ্ট লাগে।”

মায়ের কোলে সোহান
সোহান ইসলাম একা নয়। বিরল রোগে আক্রান্ত অনেকের নাম পোর্টালে ওঠেনি। বিরল রোগের নীতি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এ রাজ্যের কো-অর্ডিনেটর দীপাঞ্জনা দত্তের বক্তব্য, “বিরল রোগগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, গ্রুপ ওয়ান, গ্রুপ টু, গ্রুপ থ্রি। এ রাজ্যে পোর্টালে নথিভুক্ত ২৭৯ জনের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রুপ থ্রির অন্তর্গত। তাতেও সকলে যে নিয়মিত চিকিৎসা পাচ্ছেন তা নয়। মাত্র ২৭৯ জনের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। তার বাইরে সোহানদের মতো অপেক্ষায় থাকা অসুস্থ শিশুর সংখ্যা সাতশোর বেশি। সময়ে তাঁদের চিকিৎসা না হওয়ায় ধীরে ধীরে তাঁদের প্রাণশক্তি ক্ষয় হচ্ছে। খাদের ধারে রয়েছে এই শিশুরা। কর্নাটক, রাজস্থানের নিজস্ব বিরল রোগের নীতি রয়েছে। এ রাজ্যে তেমন কোনও নীতি নেই। সব স্তরে সমন্বয় সাধন করে যে সচেতনতা গড়া প্রয়োজন, তাও এই রাজ্যে বিরল।”
এসএসকেএমের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েও বিরল রোগ নিয়ে রাজ্যের নীতি প্রণয়ন প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন বিরল রোগে আক্রান্তদের অভিভাবকদের সংগঠন কিওর এসএমএ ফাউন্ডেশনের সহ প্রতিষ্ঠাতা মৌমিতা ঘোষ।





