
কলকাতা: আরজি কর-কাণ্ড, কেটে গিয়েছে এক বছর। শুক্রবার রয়েছে রাত দখল। আর দিন পেরতেই শনিবার পর পর দু’টি অভিযান। একটি রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ভবন নবান্নের দিকে। অন্যটি, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি কালীঘাটের দিকে। কিন্তু এই দুই অভিযান সংক্রান্ত কোনও আবেদন মেইল বা লিখিত ভাবে পৌঁছয়নি পুলিশের কাছে। শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে এমনটাই বললেন এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম।
তিনি জানান, “আমরা সমাজমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। গত বছর যারা এই অভিযান করেছিল, সেই ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তারা জানিয়েছে, এই অভিযানের সঙ্গে তারা কোনও ভাবেই জড়িত নয়।”
এরপরেই এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার আদালতের রায় তুলে ধরে বলেন, “নবান্ন অভিযান নিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, প্রতিবাদ মৌলিক অধিকার। তবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও হিংসা বেআইনি। এই হিংসা থেকে বিরত থাকা, সম্পত্তি নষ্ট না করা এটা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। হাইকোর্ট আরও বলেছে, যদি প্রতিবাদ কর্মসূচি করতেই হয়, তা হলে সেটা হবে আইন মেনে ও শান্তিপূর্ণভাবে হোক। প্রয়োজনে রাজ্যের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ জারি করা যেতে পারে।”
তাঁর সংযোজন, “নবান্ন রাজ্য সরকারের সচিবালয়। আর নিরাপত্তার নিরিখে অত্য়ন্ত স্পর্শকাতর এলাকা। হাওড়ার নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী ইতিমধ্যেই নবান্ন চত্বরে ন্যায় সংহিতার ১৬৩ নং ধারা বা আগের আইন অনুযায়ী ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। সুতরাং, নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় সকল প্রকারের মিটিং, মিছিল, প্রতিবাদ নিষিদ্ধ।” কিন্তু প্রতিবাদ তো গণতান্ত্রিক অধিকার। এদিন সেই কথাই উল্লেখ করে আদালতের রায় ধরে বিকল্প ব্য়বস্থার কথা বলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ।
তাঁর কথায়, “হাওড়া পুলিশ প্রতিবাদের জন্য নবান্নের উপযুক্ত বিকল্প হিসাবে সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ডকে চিহ্নিত করেছে। অন্যদিকে, কালীঘাটের বিকল্প রূপে চিহ্নিত করা হয়েছে রানি রাসমণি চত্বরকে। অর্থাৎ এই দুই জায়গায় আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ দেখাতে পারবেন। বিকল্প জায়গা ছাড়া অন্য কোথাও জমায়েত হলে সেটা পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। সংগঠকদেরকে জানাব, কোথায় কত বাস আসবে, কত মানুষ আসবেন, পুলিশকে আপনারা জানান। গোটা বিষয়টা শান্তিপূর্ণ হবে। কিন্তু আইন অগ্রাহ্য হলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মার জানিয়েছেন, শনিবার বিকালে অভয়া মঞ্চের কালীঘাট অভিযান হওয়ার যে কথা রয়েছে, তা সম্ভব নয়। পরিবর্তে জায়গা প্রদান করা হয়েছে। আর এই বিষয়ে হাইকোর্টে এখনও শুনানি চলছে। অন্যদিকে হাওড়ার নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “সবাইকে অনুরোধ শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করুন। সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ডে মিটিং-মিছিল করুন। সিসিটিভি, ড্রোন সব দিয়ে নজরদারি চলবে।”