কলকাতা: চেনা মাঠ। গত ১০ বছরে হাতের তালুর মতো চিনে নিয়েছেন, বুঝে গিয়েছেন কোথায় কীভাবে ‘খেলতে’ হবে। বুধবার তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকে সেই চেনা ছন্দে ধরা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর নবান্নে পৌঁছেই একের পর এক মিটিং করলেন। কোভিড হোক বা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সব নিয়েই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন। এরপর সচিবালয় থেকে বেরিয়ে সোজা হাসপাতালে চলে গেলেন সারপ্রাইজ ভিজিটে।
তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর যেভাবে সারাটা দিন কাটালেন মমতা…
সকাল পৌনে ১১ টা নাগাদ নির্দিষ্ট সময়ে রাজভবনে পৌঁছে গিয়েছিলেন নেত্রী। শপথগ্রহণ শেষে সৌজন্য বিনিময় করেন। আধঘণ্টার মতো সময় রাজভবনে থেকে বেরিয়ে আসেন, রওনা দেন নবান্নের উদ্দেশ্যে।
তৃতীয়বার রাজ্যের প্রশাসনিক পদের শীর্ষ স্থান অধিকার করে সচিবালয়ে প্রবেশ করার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ করে নবান্নর ১৪ তলায় উঠে যান মমতা।
প্রথম উদ্দেশ্য কোভিড মোকাবিলা, জেতার পরই জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই মতো নবান্নে পৌঁছেই সবার প্রথম রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি একের পর বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে প্রশাসনের আমলা, সকলেই ছিলেন বৈঠকে। এরপর দ্বিতীয় ভাগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হয়। দুই দফার বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মমতা।
করোনা সংমক্রণ নিয়ন্ত্রণে আনতে এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে বড় ঘোষণা করেন মমতা। আগামিকাল থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ ছাড়াও করোনা চিকিৎসা নিয়ে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন।
মমতাকে ভারতীয় রাজনীতির স্ট্রিট ফাইটার হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন রাজনীতির কুশীলবরা। কারণ পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, তিনি সর্বদাই পথে নেমে চ্যালেঞ্জের সঙ্গে রাজনীতি করতে ভালবাসেন। করোনার প্রথম ধাক্কার সময়ও পরিস্থিতির হাল হকিকত বুঝতে মাঝে মধ্যেই রাস্তায় নেমে পড়তে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। নবান্নে কাজ সেরেই চিকিৎসার অবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সোজা পৌঁছে যান শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল পরিদর্শনে।
শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই সোজা আলিপুরে কলকাতা পুলিশের হাসপাতালে পৌঁছে যান মমতা। কীভাবে চিকিৎসা চলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কি না সবটা নিজে খতিয়ে দেখেন। এরপর সন্ধ্যা নামার আগে তিনি ফিরে আসেন কালীঘাটে নিজের বাড়িতে।