কলকাতা: খাস কলকাতায় সরকারি হাসপাতালে এক প্রসূতিকে মারধরের অভিযোগ। চিত্তরঞ্জন সেবা সদনে ওই মহিলা ভর্তি ছিলেন। কিছুদিন আগেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সদ্যোজাতকে এসএনসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই মহিলা নিজের সন্তানকে দুগ্ধপান করাতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি নিজের বেডে ফেরার পরই মহিলাকে হাসপাতালে ছাদে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, দু’জন ব্যক্তি তাঁকে ছাদে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে। মহিলার শরীরে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। চিত্তরঞ্জন সেবা সদন থেকে ওই মহিলাকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
চিত্তরঞ্জন সেবা সদন সূত্রে খবর, ওই মহিলা হাসপাতালের ছাদ থেকে নিজেই নীচে নেমে আসেন। তখন তাঁর কপাল থেকে রক্ত ঝরছিল। মহিলা কোথায় গিয়েছিলেন, কীভাবে মাথায় রক্ত এল, সেটি নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, তিনি ছাদে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে ছাদ থেকে ওই মহিলার হাতের ডিস্কও পাওয়া গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ ওই মহিলাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মহিলার মাথার পিছনের দিকে এবং শরীরের আরও বেশ কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে সূত্রের খবর। মাথার পিছনের চোটের কারণে মহিলার অনেকটা রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল চিত্তরঞ্জন সেবা সদনের অধ্যক্ষ আশিস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। তিনি বলছেন, ‘ঘটনাটি বুধবার বিকেলের। গত ২৪ তারিখ তিনি সন্তান প্রসব করেন। সদ্যোজাত এসএনসিইউ-তে ভর্তি রয়েছে। মহিলা তাঁর সন্তানকে দুধ খাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় দু’জন ব্যক্তি মহিলাকে তিনতলা থেকে ছাদে নিয়ে যায় বলে জানা যাচ্ছে। মহিলা বলছেন, তিনি ওই ব্যক্তিদের চিনতে পারেননি।’
অধ্যক্ষ আরও বলছেন, ‘মহিলা যে সময়ের কথা বলছেন, সেটি রোগীদের পরিবার-পরিজনদের দেখা করার সময়। আর যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেই সময় ওখানে ভিড়ও থাকে অনেক। মহিলার কথাবার্তায় বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। তাঁর মাথায় সামনের দিকে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অথচ উনি বলছেন, তাঁকে পিছন থেকে মারা হয়েছে। আর একবার বলছেন দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিয়েছে।’
চিত্তরঞ্জন সেবা সদনের অধ্যক্ষ আশিস মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, বিষয়টি ইতিমধ্যেই পুলিশকে জানানো হয়েছে। ভবানীপুর থানার হাতে সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ তুলে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে পুলিশ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।