NRS hospital: ‘বহুরূপী’ ফার্মাসিস্ট! নিজেই ডাক্তার, নিজেই রোগী, NRS-এ নজিরবিহীন ওষুধ পাচারের অভিযোগ

NRS hospital: ওষুধ পাচারের অভিযোগ নিয়ে এনআরএসের অ্যাডিশনাল মেডিক্যাল সুপার শর্মিলা মৌলিক বলেন, "একটা অভিযোগ জমা পড়েছে। এমএসভিপি দেখছেন। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারব না।"

NRS hospital: বহুরূপী ফার্মাসিস্ট! নিজেই ডাক্তার, নিজেই রোগী,  NRS-এ নজিরবিহীন ওষুধ পাচারের অভিযোগ
কী বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?Image Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jun 16, 2025 | 3:52 PM

কলকাতা: আরজি কর হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যালের পর এন‌আর‌এস মেডিক্যাল কলেজ। ফের সরকারি হাসপাতালে ওষুধ পাচারের অভিযোগ। বহির্বিভাগে সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ ওষুধ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের ওপিডি’র ফার্মাসি ইনচার্জের বিরুদ্ধে এম‌এসভিপি’র কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে।

কীভাবে হত ওষুধ পাচার?

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়মানুযায়ী চিকিৎসকদের দেওয়া স্লিপের ভিত্তিতে ওষুধ পান রোগীরা। এখানেই কারসাজি করেছেন অভিযুক্ত ফার্মাসিস্ট। অভিযোগ, নিজেই চিকিৎসক সেজে স্লিপ তৈরি করেছেন। তার ভিত্তিতে ওষুধ নিয়ে সেগুলি অন্যত্র পাচার করেছেন। বহির্বিভাগের ওপিডি থেকে ডায়াবিটিস, হৃদরোগ, স্ত্রী রোগের ওষুধ পাচার করা হয়েছে। ওই ফার্মাসিস্টের বিরুদ্ধে এমএসভিপি-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সহকর্মীরা।

কোন কোন ওষুধ পাচারের অভিযোগ-

  • ইনসুলিন গ্লারজিন
  • ইনসুলিন সল্যুবিউল অ্যান্ড এনপিএইচ কম্বিনেশন ৩০:৭০
  • ডাপাগ্লিফ্লোজিন ১০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট
  • লিভোফ্লোক্সাসিন ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট
  • মেটফরমিন ৫০০ মিলিগ্রাম
  • মেটফরমিন ১০০০ মিলিগ্রাম
  • টেনেলিগ্লিপটিন
  • টেলমিসার্টান
  • অ্যাসপিরিন
  • আইরন অ্যান্ড ফলিক অ্যাসিড

ওষুধ পাচারের অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিলেন অভিযুক্ত ফার্মাসিস্ট। তাঁর যুক্তি, তিনি শাসকদলের সংগঠন করেন। সেজন্য তাঁর বিরোধী সংগঠনগুলির সঙ্গে যুক্তরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যে অভিযোগ করছেন।

ওষুধ পাচারের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ এনআরএস কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের অ্যাডিশনাল মেডিক্যাল সুপার শর্মিলা মৌলিক বলেন, “একটা অভিযোগ জমা পড়েছে। এমএসভিপি দেখছেন। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারব না।” এনআরএসের এমএসভিপি মানবেন্দ্র সরকারকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টা এড়িয়ে গেলেন তিনি। বললেন, “আমি বলতে পারব না।”

ওষুধ পাচারের অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার। তাদের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, “এটা নতুন কিছু নয়। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টায় ২৪টির বেশি দুর্নীতি সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ঘটে চলেছে। দেখা যাবে, তারাই দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে, যারা শাসকদলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। এনআরএসের এই দুর্নীতি খতিয়ে দেখা যাবে, শাসকদলের চিকিৎসা নেতা থেকে পদস্থ অফিসার, অনেকেই যুক্ত রয়েছেন। দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি না দিয়ে প্রশ্রয় দেওয়া হলে, দুর্নীতি আটকানো যাবে না। ”

জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্সের সদস্য পবিত্র গোস্বামী বলছেন, “এই সরকারের আমলে দেখা যাচ্ছে, শাসকদলের যে সংগঠন, সেগুলি তাদের ভূমিকা পালন করছে না। অন্য সংগঠনগুলিকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্রের উপর যে আক্রমণ, তার জেরেই দুর্নীতিগ্রস্তরা সুযোগ নিচ্ছেন। সরকারের ওষুধ কোথায় যাচ্ছে, কেউ জানে না। ন্যক্কারজনক যে ঘটনাগুলি ঘটছে, তাকে ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।”

এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ওষুধ পাচারের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “যদি এমন ঘটনা ঘটে, তবে তার অবশ্যই তদন্ত হবে। তবে দেখতে হবে, সাজানো কি না।” আরজি করের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আরজি করে রক্তমাখা গ্লাভসের কথা মিডিয়াতেই দেখানো হয়েছিল। পরে তা সাজানো বলে জানা যায়। তবে এই ঘটনা যদি সত্যি হয়, অভিযুক্তর অবশ্যই শাস্তি হবে।”