
কলকাতা: বছর দুই পর কলকাতার ব্রিগেডে আয়োজিত হয়েছে গীতাপাঠ। লক্ষ নয়, এবারের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ লক্ষ কণ্ঠ। রবিবার শহরের ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড সাক্ষী থাকল আরও এক সামাজিক পট পরিবর্তনের। যেখানে এলেন এক ঝাঁক সাধুসন্ত। উপস্থিত রয়েছেন বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির নেতানেত্রীরাও। উপস্থিত রয়েছে বাগেশ্বর ধামের প্রধান পুরোহিতও। নাম ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী, তবে জনমানসে পরিচিতি বাগেশ্বর ধাম সরকার বলে।
রবিবার ব্রিগেডের গীতা পাঠের মঞ্চ থেকে হিন্দু রাষ্ট্রের পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি। বার্তা দিলেন বাংলাকে একজোট করার। আবার ইঙ্গিতে তোপ দাগলেন ভরতপুরের নিলম্বিত তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধেও। এদিন ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ বলেন, ‘প্রদেশ যখন এক হয়, তখন দেশ তৈরি হয়। তাই বাংলার হিন্দুদের উদ্দেশে আমার বার্তা, আপনারা যখন এক হবেন তখনই ভারত হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’
লোকসভা ভোটের আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ব্রিগেডে আয়োজন করা হয়েছিল এক লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের। দু’বছর পর দোড়গোড়ায় যখন বাংলার বিধানসভা নির্বাচন, ঠিক সেই আবহেই আবার আয়োজিত হল পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ। আয়োজনের দায়িত্বে সেই ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’। অবশ্য একাংশের মতে, নেপথ্য়ে বিজেপির মদত রয়েছে। রবির মঞ্চ থেকে হুমায়ুনের দিকেও ইঙ্গিতে আক্রমণ করেছেন বাগেশ্বর ধাম সরকার।
এই গীতাপাঠ অনুষ্ঠানের ২৪ ঘণ্টা আগে ব্রিগেড মঞ্চ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে আয়োজিত হয়েছিল আরও একটি অনুষ্ঠানের। যা ঘিরে একাংশের উন্মাদনা, উত্তেজনা একেবারেই কম ছিল না। শনিবার এই সময়ই বেলডাঙায় জাতীয় সড়ক ১২-এর পাশের একটি খোলা জায়গায় ‘বাংলার বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর করেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তার ২৪ ঘণ্টা পর শহরে গীতাপাঠের আয়োজন। দু’টি ঘটনার নেপথ্যেই রাজনৈতিক প্ররোচনা দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিন হুমায়ুনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বাগেশ্বর ধাম সরকার বলেন, ‘যাঁরা এক সময় ভারতে আক্রমণ চালিয়েছিল, তাঁদের নামাঙ্কিত এই দেশে কি কোনও কিছু তৈরি করা উচিত? আমাদের মাথায় রাখতে হবে এটা বাবরের দেশ নয় রঘুবরের দেশ।’