কলকাতা: ঘড়িতে দুপুর ৩টে। ফয়সাল এবং আমানুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ফ্ল্যাটে ঢুকলেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার উল আজিম। ডুপ্লে (দ্বিতল) ফ্ল্যাটের ওপর তলার ঘরে তখন রয়েছেন সেলেস্টা রহমান। বাইরে জুতো খুলে তিনজন (সাংসদ, ফয়সাল ও আমানুল্লাহ) ঢুকে পড়লেন ফ্ল্যাটে। ভিতরে নীচের ঘরে তখন উপস্থিত জিহাদ এবং সিয়াম ওরফে সাইম। জিহাদ অর্থাৎ যাঁকে দিয়ে সাংসদের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটানো হয়েছিল, তাঁর বয়ান অনুযায়ী এমনই তথ্য পেয়েছেন ভারত ও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। আজ, সোমবার নিউটাউনের সেই ফ্ল্যাটে খুনের ঘটনা পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা প্রধান।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জিহাদের বর্ণনা থেকে জানা গিয়েছে, ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অচৈতন্য করে ফেলা হয় সাংসদকে। এরপর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। রান্নাঘর সংলগ্ন একটা জায়গায় খুন করেন আততায়ীরা। সেই জায়গায় ছিল একটি সিসিটিভি, যা আগে থেকেই কাপড় এবং লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন সেলেস্তা রহমান। খুন করার পর সোজা রান্নাঘরে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। টুকরো টুকরো করা হয়। দেহ থেকে হাড় মাংস আলাদা করে আলাদা আলাদা প্যাকেটে ঢোকানো হয়।
সেলেস্টার দাবি তিনি ওপরে ছিলেন। নেমে এসে আর দেখেননি আনওয়ার উলকে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গোয়েন্দারা বলছেন, বিকেল ৪টে নাগাদ ওই সাংসদেরর জুতো, যেটা বাইরে খোলা ছিল, সেটা আততায়ীরা নিয়ে যায় ভিতরে।
এরপর কী হল? গোয়েন্দাদের দাবি, জিহাদ বলছেন, ভাঙড়ের রাস্তায় বাগজোলা খালের কৃষ্ণমাটি ব্রিজের কাছে ফেলা হয় দেহাংশ। সাংসদের মোবাইল এবং পোশাক ফেলা হয় গাবতলা বাজারের কাছে। মাথার খুলির টুকরো ফেলা হয় শাসনের কাছে একটি ভেড়িতে।
সিয়াম ওদিকে, সাংসদের সিম কার্ড নিয়ে পালিয়ে যায় নেপালে। নিজের মোবাইলে বার কয়েক অ্যাক্টিভও করে। তাই মুজাফফরপুরে সাংসদের মোবাইল টাওয়ার পাওয়া গিয়েছিল। এদিন ঘটনা পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি, দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে পাওয়া রক্তের নমুনা ডিএনএ প্রোফাইলিং এর জন্য পাঠানো হচ্ছে সিআইডি-র তরফ থেকে।