
কলকাতা: রবিবার নয়ডা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন বিভাস অধিকারী। তিনি ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁর ছেলে-সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর বিভাস গ্রেফতার হতেই তাঁকে নিয়ে বিস্ফোরক এলাকাবাসী। বেলেঘাটাতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন বিভাস। সেখানে নাকি নীল-লাল বাতি লাগানো গাড়ি ঢুকত মাঝে মধ্যেই।
এলাকার প্রবীণ নাগরিকদের একাংশ বলেন, “আমাদের পরিবেশ এর আগে ভালই ছিল। উনি আসার পর পরিবেশ থমথমে হয়ে যায়। লাল-নীল বাতি লাগানো গাড়ি আসত। তারপর ওঁর তিন-চারটে বাউন্সার ছিল। তাঁদের কোমরে ছোট ছোট চেম্বার থাকত। আগ্নেয়াস্ত্র রাখত।” আরও একজন বললেন, “সব ছিল পঞ্জাবি সিকিউরিটি। দেখে মনে হত কনভয় ঢুকত। এক একজন সর্দারজি নীল পাঞ্জাবি পরতেন। তাঁদের কোমরে ছোট্ট আগ্নেয়াস্ত্র থাকত। হিন্দি সিনেমায় যেমনটা দেখি। কালকে রাতেও দেখি বডিগার্ডগুলো খাবার নিয়ে ঢুকছে। এরপর রাতে দেখি হাওয়া।” এলাকার বাসিন্দারা এ দিন আঙুল দিয়ে দেখালেন,ভাড়া বাড়ি দোতলায় সাইনবোর্ড খুলে নিয়েছিলেন বিভাস। স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “ইন্টারপোলের বোর্ড ভাড়া নিয়েছে। এখানে লোক থাকত। আমাদের সঙ্গে কখনও কথা হয়নি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেলেঘাটায় যার বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন বিভাস, সেই বাড়ির মালিকের নাম অরুণ ঘোষ। এলাকাবাসীর দাবি, অরুণ আগে থেকেই বিভাসকে চিনতেন। অভিযোগ, মানিকতলা থেকে অফিস সরিয়ে বেলেঘাটায় আস্তানা তৈরি করতে সাহায্য করে অরুণ। তার বদলে মাসে-মাসে নিতেন চল্লিশ হাজার টাকা।
এ দিন, অরুণ টিভি৯ বাংলাকে বলেন, “মাস খানেক আগে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। বলেছিল অফিস হবে। বলেছিল পুলিশের কী সব হবে। আমার সঙ্গে ১১ মাসের চুক্তি ছিল। বাকি আর ওর সম্বন্ধে কিছু জানি না।”
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম উঠে এসেছিল এই বিভাস অধিকারীর নাম। বীরভূমের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি ছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দাদের তদন্তের প্রশ্নের মুখেও পড়েন তিনি। পরবর্তীতে তৃণমূল ছেড়ে নিজের দল খোলেন। এবার ফের একবার সংবাদ শিরোনামে বিভাস। আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থার নামে থানা খুলে প্রতারণার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন মামলার তদন্ত করার নামেও টাকা তুলতেন তিনি বলে দাবি। এরপরই গতকাল নয়ডা থেকে গ্রেফতার হন তিনি।