
কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা হকের চাকরির দাবিতে রাস্তায় বসে ছিলেন তাঁরা। করছিলেন অনশনও। আর চারদিকে মোতায়েন বিধাননগর পুলিশ। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছিলেন তাঁরা। কিছুদিন আগে পর্যন্ত করুণাময়ীর বুকে ছিল এই চিত্র। পরে যুদ্ধ আবহে পুলিশের তরফ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়। জরুরি পরিস্থিতিতে উঠে যেতে বলা হয় চাকরিহারাদের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি বিকাশভবনে। ব্যারিকেড ভেঙে বিধাননগর পুলিশের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে লোহার গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে যান চাকরিহারারা। রীতিমতো বিকাশভবনের দখল নেন তাঁরা! কিন্তু কেন হঠাৎ এই হেন তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হল? চাকরিহারা শিক্ষকদের বক্তব্য, ‘রাজ্য সরকার তলায় তলায় পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধি মেহবুব মণ্ডল বলেন, “আমরা অবস্থান আন্দোলন চালাচ্ছিলাম। আমাদের কাছে খবর ছিল, আমাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করে ভিতরে ভিতরে একটা পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। শুধু প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে এমন নয়, তারা নোটিফিকেশনও রেডি করে ফেলেছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, এখানে অবস্থান করছি, যাতে ওনারা দেখা করেন, সামগ্রিক বিষয়টা জানান। কারণ প্রতিশ্রুতিভঙ্গের কাহিনী শুনেছি।”
রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশন করার সময়েও চাকরিহারাদের অন্ধকারে রেখেছিল বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, “আমাদের বলা হয়েছিল, যখন রিভিউ পিটিশন ফাইল করবে, সে সম্পর্কে সামগ্রিক আলোচনা আমাদের সঙ্গে করবে। করেনি। চুপি চুপি অন্ধকারে রিভিউ পিটিশন করে দিয়েছিল। আমরা যখন পরীক্ষার প্রস্তুতি, তখন অবস্থানে বসি। তাও আমাদের সঙ্গে দেখা করা হয়নি।”
চাকরিহারারা এদিনের আন্দোলনে স্পষ্ট করে দেন, “আমরা দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেব না। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতেই দেব না। যতক্ষণ পর্যন্ত সদর্থক কোনও ইঙ্গিত না আসছে, আমরা বিকাশভবন ছাড়ব না।”
চাকরিহারা আপাতত বিকাশভবনের ভিতরে রয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সরকারের তরফ থেকে তাঁদের কাছে এসে আলোচনায় বসছেন, যতক্ষণ না অবস্থান স্পষ্ট করছে, ততক্ষণ তাঁরা বিকাশভবন ছাড়বেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।