কলকাতা: বামেদের (Left in Bengal) সভা-সমাবেশ-মিছিলে এত লোক কী করে হচ্ছে? চিন্তিত কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। এবার তৃণমূলের পাশাপাশি ৩৪ বছরের বাম শাসনের দুর্নীতি নিয়ে প্রচার করতে মাঠে নামছে বিজেপি (BJP)। দলের উপরমহল থেকে এসেছে এই নির্দেশ। ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২। সরকারি কাজে কলকাতায় (Kolkata) এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেদিন হঠাৎ এয়ারপোর্ট থেকে বিজেপির রাজ্য দফতরে চলে আসেন তিনি। এদিকে সেদিনই আবার হুগলিতে (Hooghly) ছিল বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক। শাহ আগমনে সেই বৈঠক তড়িঘড়ি শেষ করে কলকাতায় ফিরে আসেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা। আধ ঘণ্টার বৈঠকও করেছিলেন অমিত শাহ।
সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই বামেদের ‘জনপ্রিয়তা’ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছিলেন অমিত শাহ। ওই বৈঠকেই তিনি বলেছিলেন, “বামেদের ভোট কেন বাড়ছে? আপনারা কী করছেন? মানুষের কাছে যান। গ্ৰাম বাংলায় মানুষের সঙ্গে কথা বলুন।” যদিও তাঁর নির্দেশ বঙ্গ বিজেপির নেতারা কতটা শুনেছেন তা নিয়ে নানা মতামত থাকলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বিজেপি সমর্থকদের জন্য রয়েছে মন খারাপের ছবি। সূত্রের খবর, বুথ কমিটি গড়ার অভিযানে নেমে দেখা যাচ্ছে মাত্র ২৫ শতাংশ বুথে কমিটি তৈরি হয়েছে। সব জায়গাতেই যেন একটা গা ছাড়া ভাব। রাজ্য নেতাদের রিপোর্টের সঙ্গে মেলে না কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের রিপোর্ট। বহু জায়গায় নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে উপরতলার যোগ নেই বলেও খবর। ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘর ছাড়া কর্মীদের কথাও ভুলতে বসেছেন অনেকে! দলের সাংগঠনিক বৈঠকেও নেতা-কর্মীদের ভিড় সেভাবে নজরে পড়ে না। স্বভাবতই তাতে প্রশ্ন উঠছে তবে কী বিরোধী দল হিসাবে রাশ ক্রমেই আলগা হচ্ছে বিজেপির?
পরিস্থিতি সামাল দিতেই নতুন নির্দেশ?
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পরিস্থিতি সামাল দিতেই এসেছে নতুন নির্দেশ। এবার তৃণমূলের পাশাপাশি বাম জমানার দুর্নীতি নিয়েও জোরকদমে প্রচারে নামছে পদ্ম শিবির। শুধু বড় সমাবেশ নয়, ছোট ছোট সমাবেশের আয়োজন করে দলীয় কর্মীদের এই প্রচারে সামিল করতে হবে। এসেছে এমনও নির্দেশও। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে বামেদের আক্রমণ করা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। ‘রাম-বাম’ গটআপের অভিযোগেও প্রায়শই সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। কিন্তু, চলতি মাস থেকেই খানিক বদলে গিয়েছে বিজেপির আক্রমণের ধার। তৃণমূল আর বাম জমানা প্রায় এক, নতুন এ কথা শোনা যেতে শুরু করেছে শুভেন্দু অধিকারী থেকে দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার থেকে শমীক ভট্টাচার্যদের মুখে।
বিজেপি নেতারা তো সাফ জানাচ্ছেন, পুরোটাই তৃণমূলের খেলা। ইচ্ছা করেই বামেদের জায়গা ছাড়ছে তৃণমূল। বিজেপিকে দুর্বল করতেই এই চক্রান্ত করা হচ্ছে। বিজেপি নেতারা স্পষ্টই বলছেন, “এ কারণেই মানুষের কাছে বাম জমানার কথাও বলতে হচ্ছে। মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হয় তাই সবটা বলছি। তাই প্রচারে নেমেছি আমরা।”