দিলীপ, কৈলাসদের তুলোধনা করলেও চন্দ্রিমার প্রশংসায় বিজেপির তথাগত

শৃঙ্খলাপরায়ণ কর্মী, ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব, সঙ্গে অনুশাসন। বিজেপির (BJP) শীর্ষ নেতারা দলের পরিচয় এ ভাবে দিতেই ভালবাসেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বারবার ছন্দপতন।

দিলীপ, কৈলাসদের তুলোধনা করলেও চন্দ্রিমার প্রশংসায় বিজেপির তথাগত
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 05, 2021 | 8:03 AM

কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘর ছাড়াদের ঘরে ফেরানো নিয়ে কোন্দল বিজেপির (BJP) অন্দরেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও দলের বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়ের মধ্যে ক্রমেই জোরাল হচ্ছে বাকযুদ্ধ। দলীয় নেতৃত্বকে দুষে শাসকদলের নেতাদের বাহবা দেওয়ার ঘটনায় চওড়া হচ্ছে দিলীপ-তথাগতের সম্পর্কের ফাটল। একদিকে তথাগত রায় যখন ‘ডি’, ‘কে’, ‘এস’দের নিজের টুইটে তুলোধনা করছেন, উল্টোদিকে গাল ভরা প্রশংসা শোনা যাচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের জন্য।

টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তথাগত রায় বলেন, “বিজেপির নেতারা আমাকে কিছুই বলেনি। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যেটা বলেছেন সেটাকে আমি ফেস ভ্যালুতেই নিয়েছি। অর্থাৎ উনি যেটা বলেছেন সেটা সততার সঙ্গে বলেছেন, সিনসিয়ারিটির সঙ্গে বলেছেন। এটাই আমি ধরে নিয়েছি। তাই আমি ওনাকে ধন্যবাদও জানিয়েছি।”

শৃঙ্খলাপরায়ণ কর্মী, ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব, সঙ্গে অনুশাসন। বিজেপির শীর্ষ নেতারা দলের পরিচয় এ ভাবে দিতেই ভালবাসেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বারবার ছন্দপতন। বাংলায় ভরাডুবির পর একাধিক বার দলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। ভোটের ফল প্রকাশের পরই রাজ্য নেতা ও কেন্দ্রে দু’ একজন নেতার নাম করে তোপ দাগেন তথাগত রায়। ঘরছাড়া ইস্যুতেও আবার সরব তিনি।

সম্প্রতি টুইটারে লেখেন, ‘কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী তৃণমূলের গুন্ডাদের দাপটে ঘরছাড়া। ঘরে ফিরতে হলে তাঁদের মোটা টাকা দিতে হবে। নেতাদের মধ্যে কে, এস এ পালিয়ে গিয়েছেন। আর ডি তো ফোনই তোলেন না।’ এ ক্ষেত্রে ‘কে’-র অর্থ কৈলাস বিজয়বর্গীয়, ‘এস’ এবং ‘এ’-র অর্থ শিবপ্রকাশ ও অরবিন্দ মেনন। ‘ডি’ বলতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই ইঙ্গিত করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে তথাগতর এই টুইটটি রিটুইট করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি তথাগতর উদ্দেশে লেখেন, “স্যর, আপনার কাছে আবেদন ঘটনাটির বিস্তারিত তথ্য আমাদের অবিলম্বে জানান যাতে আমরা রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সবাইকে ঘরে ফেরাতে পারি।” সঙ্গে চন্দ্রিমার আশ্বাস, “যারা এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।” শাসকদলের মন্ত্রীর এই সৌজন্য মন কাড়ে তথাগতর।

আরও পড়ুন: আজ তৃণমূল ভবনে মহা বৈঠকে নজরে পাঁচ, বড়সড় রদ বদলের ইঙ্গিত

তবে তথাগতর বুধবারের টুইটের জবাব শুক্রবার দেন দিলীপ ঘোষও। বলেন, “যিনি বলছেন তিনি তো পাশে থাকতে পারেন। আমি তো কর্মীদের সঙ্গেই আছি।” অর্থাৎ ভোট পরবর্তী বঙ্গে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে যে ক্ষোভ-উষ্মার ধিকি ধিকি আগুন জ্বলছে তা এক প্রকার স্পষ্ট। বর্তমান বিজেপির পরিস্থিতি নিয়েও সে কারণেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। স্পষ্ট বলেন, “এই মুহূর্তে রাজ্য বিজেপির ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে না।” দিল্লি যাচ্ছেন তিনি রিপোর্ট দিতে। শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে এবং ‘অবস্থাও বদলাবে’। অর্থাৎ এখনই পুরোপুরি হাল ছাড়ছেন না বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতা।