ফের অঙ্গদানে নজির বাংলার, প্রৌঢ়ার অঙ্গে নতুন জীবন চারজনের

বাংলার দু'জন রোগী এবং ভিন রাজ্যের দু'জনের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হবে।

ফের অঙ্গদানে নজির বাংলার, প্রৌঢ়ার অঙ্গে নতুন জীবন চারজনের
উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সুদীপ্তা দত্ত।
Follow Us:
| Updated on: Feb 06, 2021 | 11:24 AM

কলকাতা: আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাইপাসের ধারে ফর্টিস হাসপাতালে (Fortis Hospital) ভর্তি হয়েছিলেন ৫৪ বছরের সুদীপ্তা দত্ত। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সুদীপ্তাদেবীর হার্ট অ্যাটাক হয়। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরপরই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। শুক্রবার সকালে ব্রেন ডেথ হয় তাঁর। চিকিৎসকদের সবরকম চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। তবে মৃতের পরিবার তাঁর অঙ্গদানে সম্মতি দেওয়ায় নতুন করে বাঁচার আলো দেখছে চার-চারটি জীবন। সেই সঙ্গে লকডাউন পরবর্তীতে প্রথম আন্তঃরাজ্য অঙ্গদান করিডর ট্রান্সপোর্ট (Inter-city organ donation corridor transport) -এ নজির গড়ল শহর কলকাতা।

শুক্রবার সকালে সুদীপ্তাদেবীর মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের পরামর্শে অঙ্গদানে সম্মতি দেন তাঁর পরিবার। তার পরই গ্রহীতার খোঁজ শুরু হয়ে যায়। বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে তাঁর লিভার নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। এছাড়া দু’টি চোখ এবং দু’টি কিডনি সংরক্ষণ করে পাঠানো হয়েছে রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে। এর ফলে অন্তত চারজনকে জীবনের আলোয় ফিরিয়ে আনা গেল।

এ প্রসঙ্গে ফর্টিস হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট আরাফাত ফয়জল বলেন, “প্রিয়জনের মৃত্যুতে একটা শোকগ্রস্ত পরিবারের এরকম মহৎ উদ্দেশ্য দেখে অভিভূত হলাম। এ রাজ্যের দু’জন রোগী এবং বাইরের রাজ্যের দু’জন রোগীর শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হবে।” মৃতের অঙ্গদানে রাজি হওয়ায় তাঁর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আরাফাত ফয়জল। সুদীপ্তাদেবীর ছেলে সুরজিৎ দত্তের কথায়, ”মাকে তো আর ফিরে পাব না। তবে তাঁর জন্য আরও চারটে জীবন বাঁচবে এটাই পাওনা।” তিনি নিজেও মরনোত্তর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।

আরও পড়ুন: বিদায়ী কাউন্সিলরদের ‘মুড’ বুঝতে বৈঠকে পিকে-ফিরহাদ, গরহাজির বেশ কয়েকজন

প্রসঙ্গত, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হার্ট, ত্বক, অন্ত্র, কর্নিয়া ইত্যাদি বিকল হয়ে গেলে অন্যের দান করা অঙ্গ অসুস্থ মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করে তাঁকে জীবনের আলোয় ফিরিয়ে আনা যায়। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী অঙ্গ পাওয়া যায় না এ দেশে। অথচ সঠিক ব্যবস্থা থাকলে মৃতের শরীরের এইসব অঙ্গ সংগ্রহ করে একজন মৃতপ্রায় মানুষকে অনায়াসে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব। এর জন্যে প্রয়োজন সাধারণ মানুষের সচেতনতা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সুরজিৎবাবুর মতো মানুষেরা দৃষ্টান্ত স্বরূপ।