AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

জল খেলেন বুদ্ধবাবু, চোখ খুলে স্ত্রী-মেয়ের কাছে জানতে চাইলেন, ‘আমি কোথায়?’

হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্ঞান ফেরার পরই বুদ্ধবাবু স্ত্রী-মেয়ের কাছে জানতে চান, 'আমার কী হল? আমি কোথায়? হাসপাতালে কবে ভর্তি হয়েছি?'

জল খেলেন বুদ্ধবাবু, চোখ খুলে স্ত্রী-মেয়ের কাছে জানতে চাইলেন, 'আমি কোথায়?'
ফাইল ছবি
| Updated on: Dec 11, 2020 | 11:20 PM
Share

কলকাতা: ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনা হল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (Buddhadeb Bhattacharya)। ধাপে ধাপে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁর জ্ঞান ফিরেছে। স্ত্রী-মেয়ের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। খোঁজ করেছেন তাঁর ছায়া সঙ্গী তপনবাবুরও। তিনি স্বাভাবিকভাবে জলও খেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে। ফলে অনেকটাই আশ্বস্ত হয়েছেন সকলে। ভেন্টিলেশন থেকে বের করার পর তিনি আদৌ জল পান করতে পারবেন কিনা, এই বিষয়টাই ভাবাচ্ছিল চিকিৎসকদের।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্ঞান ফেরার পরই বুদ্ধবাবু স্ত্রী-মেয়ের কাছে জানতে চান, ‘আমার কী হল? আমি কোথায়? হাসপাতালে কবে ভর্তি হয়েছি?’ চিকিৎসকরা জানান, বুদ্ধবাবুর ফুসফুস কাজ করতে শুরু করেছে। সব দিক থেকেই শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ভেন্টিলেশন মুক্ত করা হয় তাঁকে। তবে এখনই পুরোপুরি বিপন্মুক্ত নন তিনি। তাই আপাতত নন ইন্ভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে তাঁকে। বর্তমানে সজাগ আছেন তিনি। ব্লাড প্রেসার, পাল্স, অক্সিজেন স্যাচুরেশন সবই স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পুরোপুরি বিপন্মুক্ত হতে আরও কিছু সময় লাগবে।

তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনার পর উডল্যান্ডস হাসপাতালের সিইও রূপালি বসু জানান, “অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, বুদ্ধবাবুকে সকাল সাড়ে ১১টার সময় ভেন্টিলেটর থেকে বার করা সম্ভব হয়েছে। এখন উনি নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে আছেন। সুস্থতার সব মাপকাঠিতে তাঁর শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। স্ত্রী-মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী তপনবাবুকে দেখতে চান। ভেন্টিলেটর থেকে বের করার পরে দুপুর দেড়টার সময় যে এবিজি পরীক্ষা করা হয়েছে তার‌ও রিপোর্ট খুব ভাল এসেছে। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পুরোপুরি বিপদমুক্ত বলার জন্য আমাদের আর‌ও সময় দিতে হবে।”

তাহলে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি ফিরতে কতটা সময় লাগবে তাঁর? উত্তরে রূপালিদেবী বলেন, ‘ভেন্টিলেটর থেকে খুব তাড়াতাড়ি তাঁকে বার করা গিয়েছে। উনি যে অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন, সে দিক থেকে এটা অত্যন্ত ভাল খবর। কিন্তু এখনও উনি নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে আছেন। এখনও উনি শয্যাশায়ী। তাছাড়া একটা বড় ধরনের শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে দিয়ে উনি গিয়েছেন। সব মিলিয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগবে।’

অন্যদিকে রাজ্যের প্রাক্তম মুখ্যমন্ত্রী যে চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তার অন্যতম সদস্য চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা বলেছেন, রোগীকে ভেন্টিলেটর থেকে বার করার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের উপরে নজর রাখতে হয়, কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম, শ্বাসতন্ত্র এবং সর্বোপরি স্নায়ুতন্ত্র। ভেন্টিলেটর বার করার সময় এই তিন প্রশ্নেই উনি চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছেন। এখন গুরুত্বপূর্ণ হল, শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ওঁর দেহ থেকে কৃত্রিম নল বার করে আনা। আমরা বুঝতে চাইছি নল বার করার পরে রোগীর কফ তুলতে গিয়ে বা থুতু গিলতে কোন‌ও সমস্যা হবে না তো! এ বিষয়গুলো নিশ্চিত হলে কৃত্রিম নল খুলে ফেলার প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ফলে আপাত স্বস্তি পাওয়া গেলেও পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য আগামিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজ অর্থাৎ শুক্রবার আরও এক ধাপ শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ভেন্টিলেটর থেকে বার করার জন্য তাঁকে যে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল, তা বন্ধ করা হয়েছে।  অক্সিজেনের মাত্রাও ঠিক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নলের মাধ্যমে বুদ্ধবাবুকে খাওয়ানোর চেষ্টা চলছে। সে খাবারও তিনি খেয়েছেন। তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি।

আরও পড়ুন: কথা বললে বুঝতে পারছেন, নাড়ছেন হাত-পা, শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক বুদ্ধদেবের