
কলকাতা: বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ড, মৃত্য়ুমিছিল! মৃত্যু ১৪ জনের। আগুন লাগার পর দমবন্ধেই মৃত্যু হয়েছে অধিকাংশের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে দমবন্ধ হয়েই। ঘটনার সঙ্গে আমরিকাণ্ডের মিল পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। প্রথম থেকেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু তত্ত্ব সামনে আসছিল। আর তাতে সিলমোহর দিল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে ১০ জনের ময়নাতদন্ত করা হয়। যার মধ্যে ২ শিশুও রয়েছে। আরজিকরে যাদের ময়নাতদন্ত হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জনেরই ৯০ শতাংশ বার্ন ইনজুরি রয়েছে, বাকি সকলেরই মৃত্যুর কারণ দমবন্ধ হয়েই। অতিরিক্ত ধোঁয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড তাঁদের শরীরে ঢুকেছে। শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়ে, দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ২ শিশুও রয়েছে। যাঁরা হোটেলের ভিতরে ছিলেন, তাঁরা বের হতে পারেননি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি সপ্তর্ষী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাঠ, কিংবা গ্যাসোলিন জাতীয় কিছু থাকলে, সেখান থেকে কার্বন মনো অক্সাইড উৎপাদন হয়, সেটাই শরীরে ঢোকে, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। আমরির ঘটনায় যেভাবে মৃত্যু হয়েছিল, অর্থাৎ সরাসরি আগুনে পুড়ে নয়, কার্বন মনো অক্সাইডে বিষক্রিয়ার কারণে মৃত্যু।”
প্রসঙ্গত, এই হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।বাসিন্দাদের অভিযোগ, একের পর এক বেআইনি অংশ এই হোটেলে তৈরি করা হয়েছে। এই হোটেলে আবার রান্নাঘর ভেঙে তৈরি হচ্ছিল পানশালা, অভিযোগ, সেটাও বেআইনিভাবেই। পানশালা তৈরি করতে গিয়ে দোতলার যাবতীয় জানালা এবং দরজা ভেঙে, সেখানে ইটের গাঁথনি করা হয়েছিল সেখানে। আর মঙ্গলবার রাতে যখন আগুন লাগে, তখন হোটেলের এমার্জেন্সি গেট দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু এমার্জেন্সি গেটের বাইরেও মজুত করা ছিল নির্মাণ সামগ্রী। নির্মাণ সামগ্রী স্তূপাকার করে রাখা ভিতর দিক থেকে এমার্জেন্সি দরজার সামনে। যে দরজা খোলা থাকলে বা নির্মাণ সামগ্রী রেখে দেওয়া হলে, এই প্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যেতে বলেই মনে করছেন নির্মাণ বিশেষজ্ঞরা।