
কলকাতা: পরীক্ষার তারিখ বদলাননি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠার দিনই স্নাতকস্তরের পরীক্ষা রেখেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। কেন বারবার অনুরোধের পরও তারিখ বদলাননি সেই নিয়ে বেজায় চটেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এখন প্রশ্ন ওই দিন যদি কোনও ছাত্র বিপাকে পড়েন তখন? এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভিসি শান্তা দত্ত।
শান্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়ে ফেললেন। অনুরোধ করলেন আমরা যেন পরীক্ষা পিছোই। কারণ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের জন্য ছাত্রদের অসুবিধা হবে।” এরপরই তিনি জানান যে, এই চিঠির গুরুত্ব দিতেই সিন্ডিকেট মিটিং ডাকা হয়।
তিনি এ দিন বলেন, “আমরা পাল্টা চিঠি দেব সরকারকে। সেখানে লিখব রাস্তাঘাটের পরিস্থিতিকে নর্মাল রাখার দায়িত্ব সরকারের। যেমন বিরোধী দল ধর্মঘট ডাকলে উনি বলেন বাস-গাড়ি নর্মাল চলবে! এটাই রাজধর্ম। সেই রাজধর্মই আমরা চাইব।” একই সঙ্গে ভিসি বলেন, “ওইদিন তিরিশ হাজার ছাত্র পরীক্ষা দেবে। রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ঠিকঠাক ভাবে রাখবেন যাতে ছাত্ররা পরীক্ষা দিতে পারেন।” শান্তার দাবি, সোমবার হয়ে যাওয়া সিন্ডিকেট মিটিংয়ে উচ্চ-শিক্ষাদফতরের তরফে যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা জানাতে পারেননি, কত শতাংশ ছাত্র পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বলেছেন। তিনি বলেন, “আমার প্রশ্ন তিরিশ হাজারই কি চিঠি লিখেছিল? এটা ভীষণ অনভিপ্রেত।”
কী নিয়ে বিতর্ক?
২৮শে অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের পরীক্ষা কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এর পরপরই পরীক্ষার দিন বদল করতে বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় শিক্ষা দফতর। সোমবার ছিল সিন্ডিকেট মিটিং। সেই বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “আজ সিন্ডিকেটে স্পেশাল সেক্রেটারি এসেছিলেন। তিনি এটা উল্লেখও করেছেন যে মুখ্য়মন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। আর তাঁর অনুরোধ মানা উচিতও বলেন তাঁরা। তবে হাউস সর্বসম্মতিক্রমে ২৮শে অগস্টের পরীক্ষার তারিখ ওই জায়গাতেই রেখেছে। তিরিশ হাজার ছাত্র ছাত্রী মানসিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তাই কিছু ছাত্রের জন্য আমরা ব্যাপক ছাত্রদের এই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি না। তাঁরা পরীক্ষা দেবে। আমরাও ঘোষিত তারিখ একই রেখেছি।” এরপরই ক্ষুব্ধ হন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করেন না। উনি চাইলে ‘কেয়ারটেকার’ ভিসিকে সরাতে পারতেন। রাজ্যপাল উপাচার্যকে যেহেতু বিশেষ স্নেহ করেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী এই স্নেহকে মান্যতা দিয়েছেন। সারাননি। সুপ্রিম কোর্টে হেরেও গিয়েছেন। তবে রাজ্যের পদাধিকারী যিনি কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না সেটা রাখা যেত বলে আমার মনে হয়।”