CM Mamata Banerjee: ৪৪ হাজার বাদ ভবানীপুরেই, ফিরহাদ-দেবাশিস কুমারকে বিশেষ দায়িত্ব দিলেন মমতা
Kolkata: এ দিকে, খসড়া তালিকা প্রকাশ হতেই তৃণমূলকে একহাত নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আবার জানিয়েছেন, SIR-এর পর তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ভোট ব্যবধান রইল না। ১৪ই ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকায় আরও নাম বাদ যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

কলকাতা: ভবানীপুরের আট কাউন্সিলর এবং বিএলএ-টু (BLA ২)-দের সঙ্গে বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কলকাতার ভবানীপুরে প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজারের মতো নাম বাদ গিয়েছে। কোনও বৈধ নাম বাদ গেলে শুনানিতে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা মমতার। বৈধ ভোটারের নাম তালিকায় তুলতে সাহায্য করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত বক্সী। উপস্থিত ছিলেন দেবাশীস কুমার, সন্দীপ রঞ্জন বকসী, অসীম বসু সহ ভবানীপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রের খবর, খসড়া তালিকা প্রকাশের পর যে সমস্ত যোগ্য ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, তাঁদের নাম পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলে জানালেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষ করে মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটার তালিকা যাচাই করতে হবে বলে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। SIR নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ্য ভোটার দের নাম যাতে বাদ না যায়। তার জন্য সমস্ত বিএলএ এবং পদাধিকারীদের ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। এমনকী, অনেক জীবিত ভোটারদের মৃত হিসাবে দেখানো হয়েছে SIR খসড়া তালিকায়। সেটা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খুঁটিয়ে দেখার ও নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশেষ করে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের উপরে বিশেষ নজর দিতে স্থানীয় কাউন্সিলর অসীম বসুকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ওয়ার্ডে স্থানীয় বাঙালিদের সরিয়ে দিয়ে বহিরাগতদের ঢুকানোর অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। এই অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষ বসবাস করে থাকেন। এছাড়া খিদিরপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভার অন্তর্গত পড়ে। সেই সমস্ত ওয়ার্ডে দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ফিরহাদ হাকিমকে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী বলে দলীয় সূত্রের খবর। পাশাপশি দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশীষ কুমারকে ও কালীঘাট সংলগ্ন ওয়ার্ডের SIR ভোটার খসড়া তালিকা উপরে নজরদারি রাখতে বলেছেন দলীয় নেত্রী বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া যখন একসপ্তাহের পর শুনানি পর্ব শুরু হবে। তখন প্রতেকটি ভোটারদের পাশে দাঁড়াতে হবে। যেমন SIR প্রথম পর্যায়ে এনুমরেশন ফর্ম পূরণ করার সময় ভোটার দের সহযোগিতা করা হয়েছিল। এছাড়া যেমন আগে এলাকাভিত্তিক ক্যাম্প করা হয়েছিল। একই ভাবে পাড়ায় পাড়ায় ক্যাম্পে করে সমস্ত ধরণের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী বলে সূত্রের খবর।
এছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে ক্যাম্প করা হয়েছে, সেখানে যদি কোনও ভোটারদের কাগজ নিয়ে অসুবিধা হয়, তাঁদের ‘মে আই হেল্প ইউ ক্যাম্পে’ নিয়ে যাওয়ার ও নির্দেশ বৈঠক থেকে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করুন বলে জানিয়েছেন দলনেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়ে বলেছেন, কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হবে না। সেটা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক বিএলওদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এদিন ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিএলএ’দের সমন্বয় কেমন ছিল? সেটা ও জানতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দলীয় সূত্রের খবর। বিএলএ’রা অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা সমস্ত বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন। যতটা সম্ভব ভোটারদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ কেউ যদি দকের স্পষ্ট নির্দেশ যদি কেউ ফর্ম না ফেরত দিয়ে থাকেন। তাহলে তাদের সঙ্গে ও যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া যাদের নাম বাদ গেছে তাদের প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করতে হবে। বহুতলে বেশি করে নজর রাখারও বৈঠক থেকে পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বলে খবর
প্রসঙ্গত, এখানে উল্লেখ্য আজ খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। প্রায় ৫৮ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ভবানীপুরে বাদ পড়া নামের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭৭০। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের বুথ মিত্র ইন্সটিউশন বুথে বাদ পড়েছে ১২৭ জনের নাম। এটি ২৬০ নম্বর বুথ। তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ১২৭ জনের মধ্যে ১৩ জন মৃত। বেশিরভাগ ভোটারকেই হয় খুঁজে পাওয়া যায়নি, অথবা স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হয়েছেন। এর পরপরই বৈঠক ডাকেন মমতা। সেখান থেকেই তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দেন যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর।
