কলকাতা: আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গ্রেফতারও করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু এখনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া হচ্ছে না কয়লাপাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে। বিষয়টি আজ, শুক্রবার আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতকে জানাবে সিবিআই।
একইসঙ্গে বিকাশের কী শারীরিক সমস্যা রয়েছে? কেন তাকে ছাড়া হচ্ছে না, তাও হাসপাতালের থেকে বিশদে জানতে চাইবে সিবিআই।
বুধবার আসানসোল আদালত তার অর্ডারে উল্লেখ করেছে বিকাশের সুস্থতার কথা। সে দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে, তাও লেখা রয়েছে অর্ডারে। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত নির্দেশ দেয় বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই নির্দেশের কপি হাতে পেতেই বিকাশকে গ্রেফতারির সমস্তরকম তোড়জোর শুরু করে সিবিআই। সেদিনই হাসপাতালের কাছে আদালতের নির্দেশের কপিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্পষ্ট তদন্তকারীরা জানিয়ে দেন, সিবিআইকে না জানিয়ে বিকাশকে ছুটি দিতে পারবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই গ্রেফতার করা হয় বিকাশকে।
কয়লাকাণ্ডের লিঙ্কম্যান বিনয় মিশ্রের ভাই হচ্ছেন বিকাশ মিশ্র। বিনয়কে নাগালে পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। কিন্তু বিকাশকে গ্রেফতারির পর নানা তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার কয়লা-মামলায় অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফতারি। কারণ, বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কয়লার দু’নম্বরি টাকা লেনদেনের সিংহভাগটাই বিকাশ দেখতেন।
সম্প্রতি কয়লাপাচার কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাজি ওরফে লালা, বিনয় মিশ্র ও বিকাশ মিশ্রর ৯.২৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, জমি, গাড়ি, বেনামে থাকা সম্পত্তি ও কারখানাও রয়েছে। তদন্ত শুরু করার পর কয়লাপাচার কাণ্ডে বড় অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ইডির তরফে। এর আগে বিনয় মিশ্রের বাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অভিযোগ, গরু পাচারকাণ্ড ও কয়লা পাচারকাণ্ডে প্রভাবশালীদের কাছে টাকা লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম ছিলেন বিনয়। যদিও একাধিকবার তিনি সে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন। তবে একদিকে ইডি যখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, সিবিআইও এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারীরা। এরই মধ্যে বিনয় মিশ্রও পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানান, এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব যেন ভার্চুয়ালি হয়।
প্রসঙ্গত, কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে পলাতক বিনয় মিশ্র গত বছরই ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এর পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নেন তিনি।
উল্লেখ্য এর আগে, কয়লা কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাঝি ওরফে লালার ৫০ রকমের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেয় আসানসোল সিবিআই আদালত। জমি, বাড়ি-সহ বিভিন্ন সম্পত্তি রয়েছে লালার। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ৬৮ জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে লালার। পুরুলিয়া, আসানসোল, রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া, দুর্গাপুরে এই সম্পত্তি রয়েছে অনুপ মাঝি ওরফে লালার। এর মধ্যে কয়েকশো একর জমি রয়েছে, যেখানে কয়লা খনি বানাতে চেয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: Weather Update: ফের রাতের শহরে কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা, এবার পড়বে জাঁকিয়ে ঠান্ডা