হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এলেন করোনা রোগী! পিপিইকিট পরে চায়ের দোকানে ভোজন সারলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক!

tista roychowdhury |

Apr 13, 2021 | 5:56 PM

এই দুই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ চিকিৎসকেরা। ড. সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মানুষের এই ধরনের আচরণ আসলে অশিক্ষিতের পরিচয়। মানুষ শুধু অসতর্ক নয় ও অবুঝও। প্রত্য়েক হাসপাতাল থেকেই কোভিডের জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো  যথাযথ ব্যবহার করা উচিত।  

হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এলেন করোনা রোগী! পিপিইকিট পরে চায়ের দোকানে ভোজন সারলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক!
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

কলকাতা: বাড়ির কাছেই হাসপাতাল। করোনা (Corona) আক্রান্ত হয়ে হেঁটে হেঁটেই হাসপাতালে চলে এলেন রোগী! অন্যদিকে, করোনা রোগীকে হাসপাতালে ছাড়তে এসে পিপিইকিট পরেই চায়ের দোকানে ঢুকে চা-জলখাবার খেয়ে রীতিমতো ভোজন সারলেন অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) চালক! বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল চত্বরের এই ঘটনায় আতঙ্কিত অন্যান্য রোগীরা। হতবাক চিকিৎসকমহল।

করোনায় (COVID-19) কাবু রাজ্য। বারবার বিভিন্ন ক্যাম্পেনিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে মানুষকে। সংক্রমণে রীতিমতো ভয় ধরিয়েছে রাজ্যে ডবল মিউট্যান্ট স্টেইন। সমীক্ষা বলছে, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষের দেহে এই স্টেইন পাওয়া গিয়েছে। সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। কিন্তু সচেতনতা কোথায়! মঙ্গলবার সকালে এমনই ছবি দেখা গেল বেলেঘাটা আইডিতে।

এ দিন, সকাল দশটা নাগাদ এক রোগীকে আইডি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে দেখা যায়। নিরাপত্তা রক্ষীরা জানান, ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত। কোভিড রোগী এভাবে হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন, কী করেই বা তিনি অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া এলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ওই রোগীর দাবি, তাঁর বাড়ি হাসপাতালের কাছেই। তাই অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া হাসপাতালে চলে এসেছেন। কিন্তু রাস্তা দিয়ে আসার সময়ে তিনি অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁর থেকেই আরও অনেকের সংক্রমণ ঘটতে পারে। সে প্রসঙ্গে রোগীর পাল্টা যুক্তি, ‘আমার মুখে মাস্ক আছে। তাই সংক্রমণের জায়গা নেই।’

অন্যদিকে,  করোনা নিয়ে  অসতর্কতার আরও একটি বেনজির ছবি দেখা গেল আইডিতেই। করোনা (COVID-19) রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসার পর পিপিইকিট পরে নিকটবর্তী চায়ের দোকানে গিয়ে চা-জল খেলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক। শুধু তাই নয়, যে জগ থেকে জল খেলেন সেই জগ থেকেই জল খান বাকিরাও! নীরব দোকানিও! চালককে প্রশ্ন করতেই তিনি জানান, তাঁর হাত স্যানিটাইজ করা, পিপিকিট থেকে সংক্রমণ ছড়ায় না। তিনি কোনও অন্য়ায় করেননি।

এই দুই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ চিকিৎসকেরা। ড. সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মানুষের এই ধরনের আচরণ আসলে অশিক্ষিতের পরিচয়। মানুষ শুধু অসতর্ক নয়, অবুঝও। প্রত্য়েক হাসপাতাল থেকেই কোভিডের জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো যথাযথ ব্যবহার করা উচিত।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছেন ১,৬১,৭৩৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৮৭৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, বিহার, পঞ্জাবে দৈনিক আক্রান্ত তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের আশপাশে। ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড এবং ওড়িশাতেও দৈনিক আক্রান্ত গত কয়েকদিনে বেড়েছে। হিমাচল প্রদেশ, গোয়াতেও ৫০০-র আশপাশে রয়েছে দৈনিক সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে টিকা নিয়েছেন ২৯ লক্ষ ৩৩ হাজার ৪১৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ১০ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৬৫ কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: আবারও লকডাউন না নাইট কার্ফু? ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থনীতি? নবান্নে আজ জরুরি বৈঠকে মুখ্যসচিব

Next Article