
বোলপুর : একরাতেই বাড়িতে নেমে এল মৃত্যুর ছায়া। একারাশ শূন্যতা ফেলে রেখে চিরনিদ্রায় স্ত্রী-সহ বাড়ির মালিক। শোকের ছায়া বোলপুর (Bolpur) পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রথীন্দ্রপল্লী এলাকায়। সূত্রের খবর, এই পাড়াতেই থাকতেন পুলক গঙ্গোপাধ্যায় (৫০) ও মুক্তমালা গঙ্গোপাধ্যায় (৪৫)। গতরাতেই দুজনেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। যদিও মৃত্যুর আসল কারণ নিয়ে এখনও রয়েছে ধোঁয়াশা। স্থানীয় সূত্রে খবর, কাঁথা স্টিচের ব্যবসা করতেন ওই দম্পতি। প্রতিবেশীদের অনুমান, সম্প্রতি ব্যবসায় বড় লোকসানের সম্মুখীন হয়েছিলেন দুজনে। তারপর থেকেই ভুগছিলেন মানসিক অবসাদে। সে কারণেই সম্ভবত শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। মঙ্গলবার ভোররাতেই তাঁরা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়।
মৃত্যুর খবর চাউর হতেই তা নিয়ে ব্যাপক চাপানউতর শুরু হয় গোটা এলাকায়। ভিড় জমতে থাকে দম্পতির বাড়িতে। খবর যায় বোলপুর থানায়। মৃত্যুর আসল কারণ জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পাড়া-প্রতিবেশীদের। সকালেই দম্পতির দেহ উদ্ধার করে য়না তদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে পুলক-মুক্তমালা চলে গেলেও রেখে গিয়েছেন তাঁদের এক মাত্র কন্যা সন্তান ইন্দ্রানী গঙ্গোপাধ্যায়কে। বর্তমানে সে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে বলে জানা যাচ্ছে। মা-বাবাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছে বাড়ির একমাত্রও মেয়েও। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলকবাবুর পারিবারিক বন্ধু দিনবন্ধু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনার কথা শুনেছি। শোনার পর থেকে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে আছে। খুব খারাপ লাগছে। ওরা এখানে ভাড়া থাকত। যে ছেলেটা মারা গিয়েছে ওরা বাবা বিশ্বভারতীতে চাকরি করত।”
আত্মীয় সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার দিদির মুখ থেকে ঘটনার কথা প্রথম শুনি। কেন মারা গেল কিছুই বুঝতে পারছি না। পারিবারিক সমস্যা হয়তো ছিল। কিন্তু, কিছুই তো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করত না। কোনও বিষয়েই আলোচনা করত না। ব্যবসা করত। ভালই চলত। করোনার পর থেকে একটু অবস্থা খারাপ হয়। ব্যাঙ্ক থেকে লোন হয়তো নিয়েছিল। সেটা শোধ না করতে পেরেও সম্ভবত চাপে ছিল। তবে এখনও ঠিক কারণটা আমরাও জানতেও পারিনি।”