কলকাতা: কেউ করজোড়ে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছেন সন্তান রক্ষার স্বার্থে। কারোর আবার চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। কোথাও থেকে আবার আসছে কান্নার রোল। বি সি শিশু হাসপাতালের বর্তমান ছবিটা এইরকমই। কারণ একের পর এক শিশুর মৃত্যুর খবর আসছে সেখান থেকে। এদিন ভোর ৪টে থেকে যখন এই খবরটি লেখা হয়েছে (সন্ধ্যে ৬টা ১৬) ততক্ষণ পর্যন্ত মোট ৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃৃত্যুর রেকর্ডে এটা একদিনে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এই নিয়ে টানা ৯দিনে ৪০ শিশুর মৃত্যু হল কলকাতায়। এই খবরের মধ্যে ফের সন্ধ্যেবেলা এল আরও এক একরত্তির মৃত্যুর খবর। ফের গোটা খালি হল আরও এক মায়ের কোল। আবারও সন্তানহারা একটি পরিবার।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত শিশুর নাম রাজশ্রী ঘোষ। বয়স ২ মাস ১৯ দিন। রাজশ্রী উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা। গত সোমবার থেকে ভর্তি ছিলেন বি সি রায় শিশু হাসপাতালে। জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল একরত্তির। সোমবার থেকে শিশুটি পেডিয়াট্রিক ইনটেন্সিভ কেয়ারে ভর্তি ছিল সে।আজ দুপুর ১টা নাগাদ মৃত্যু হয় তার। অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে মৃতের শংসাপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এদিন ভোরেই প্রাণ হারিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিনাখা থানার অন্তর্গত চৈতল এলাকার এক শিশু। নাম আরমান গাজী। বয়স চার মাস। সূত্রের খবর, বিগত ৬ দিন ধরে ভর্তি ছিল হাসপাতালে। অপরদিকে, সকাল ৬টা নাগাদ মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন নাদিয়াল থানা এলাকার বাসিন্দা আতিফা খাতুনের মৃত্যু হয়। গত রবিবার জ্বর-সর্দি নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিজনরা। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু, কয়েকদিন চিকিৎসা হলেও তার শারীরিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। শিশুটির বয়স এক বছর সাত মাস বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে ভাইরাস হানায় রবিবারও ফিভার ক্লিনিকে শিশুদের দেখানোর জন্য ছুটে আসছেন বাবা-মায়েরা। ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় এমার্জেন্সিতে চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তারবাবুরা। ফিভার ক্লিনিক বহির্বিভাগের মতো। ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। রবিবার বা ছুটির দিনে অসুস্থতা নিয়ে কেউ এলে এমার্জেন্সিতে দেখাতে হয়।