
কলকাতা: শহর যেন গ্যাস চেম্বার। দীপাবলিকে কেন্দ্র করে ধোঁয়ায় ঢাকল গোটা শহর। বাতাসে বাড়ল বিষের পরিমাণ। তবে নগরপাল মনোজ ভর্মার মতে, অন্য শহরগুলির তুলনায় কলকাতার হালহকিকত অনেকটাই ঠিকঠাক ছিল। কালীপুজোর আগেই নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবহার নিয়ে সমন্বয় বৈঠক থেকে সর্তকবার্তা দিয়েছিলেন খোদ নগরপাল। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রশাসনের দেওয়া বিধির ভঙ্গ করলেই পরিণতি হবে বাজে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে লালবাজার। আর হলও তেমনটাই। সোমবার রাত পর্যন্ত নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো ও বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার শতাধিক।
সাধারণ ভাবে বাতাসে কতটা বিষ মিশেছে বা কতটা দূষিত হয়েছে সেই ইঙ্গিত দিয়ে একিউআই বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের মাপকাঠি অনুযায়ী, বাতাসে একিউআই যদি ০ থেকে ৫০-র মধ্য়ে থাকে, তবে তা ভাল। কিন্তু এই সংখ্যা যদি ৫১ থেকে ১০০ এর গন্ডিতে ঢুকে যায়, তখন পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। ১০০ থেকে ২০০-র মধ্য়ে থাকলে দূষণের মাত্রা মাঝারি হিসাবে বিবেচিত হয়। ২০১ থেকে ৩০০ হলে তা খারাপ। ৩০১ থেকে ৪০০ হলে খুব খারাপ এবং ৪০১ থেকে ৪৫০ হলে ভয়ানক। আর এই সংখ্যা যদি ৪৫০ পেরিয়ে যায় তা হলে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।
কেন্দ্রের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ভিক্টোরিয়া সংলগ্ন এলাকার একিউআই ছিল ২২৭, বিধাননগরের ১৯০, বালিগঞ্জে বাতাসের গুণমান ছিল ১৬৬, যাদবপুরে ১৯৮। রবীন্দ্রভারতী সংলগ্ন এলাকায় একিউআই ছিল ১৩৪ ও বেলুড়ে ১৬৬। এদিন নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে মোট ১৮৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৫১ জনকে। এছাড়াও বাজেয়াপ্ত হয়েছে মোট ৮৫২ কেজি নিষিদ্ধ বাজি।
সোমবার রাতভর শব্দবাজির তীব্র আওয়াজে অতীষ্ঠ হয়ে থেকেছেন শহরবাসী। এদিন এক ব্যক্তি বললেন, ‘প্রচুর বাজি ফেটেছে। জানি উৎসবের সময়, কিন্তু এত বাজি ফাটানো ঠিক নয়। বাড়িতে থেকেও দূষণটা প্রতি মুহূর্তে বুঝতে পারছিলাম। চারপাশ ধোঁয়া ধোঁয়া লাগছিল।’ অবশ্য নগরপাল মনোজ ভর্মার কথায় বলতে গেলে, কলকাতা রয়েছে সবার নীচে। দীপাবলি উপলক্ষে শহরজুড়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর হিড়িক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। এদিন পুলিশ কমিশনার বললেন, ‘আমরা সন্ধ্যা অবধি নজরদারি চালিয়েছিলাম। তখনও অবধি সারা ভারতের নিরিখে কলকাতায় দূষণের মাত্রা অনেকটাই কম ছিল। এখনও ১০টা ও ১২টার রিপোর্ট বিশ্লেষণ করা বাকি রয়েছে। তবে এটা বলতে পারি যে গতবছরের তুলনায় ও দেশের অন্যান্য মহানগরগুলির তুলনায় কলকাতায় শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ অনেক কম রয়েছে।’