
কলকাতা: রবিবার রাতে এক বিকট আওয়াজ, আর তারপরই ভেসে আসে আর্তনাদের শব্দ। রাত পেরিয়ে সকাল হলেই শুরু হয় খোঁজ। ভাঙা দেওয়ালের নীচে চলের প্রাণের খোঁজ। কোথাও কি কারও গলার স্বর শোনা যাচ্ছে? কান পাতেন উদ্ধারকারীরা। ঘটনাস্থলে যায় এনডিআরএফ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে খোঁজ। দেওয়াল সরিয়ে বের করে আনা হয় একের পর এক নিথর দেহ। গার্ডেনরিচে এই পুরো উদ্ধারকাজে চোখে পড়ে দুই সারমেয়কে। কখনও ধ্বংসস্তূপের ওপর দৌড়চ্ছে তারা, কখনও আবার ভাঙা দেওয়ালের ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ছে। কোথাও কেউ জীবিত অবস্থায় আটকে আছে কি না, সেই খোঁজই করে এই দুই সারমেয়।
একজনের নাম জুলি, অপরজন রোমিও। কলকাতার বুকে যাদের উদ্ধারের কাজে দেখা গেল, আন্তর্জাতিক মানের অপারেশনের অভিজ্ঞতাও আছে তাদের। ২০২৩ সালের জুন মাসে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত টার্কি-তে এনডিআরএফ-এর অপারেশনে সঙ্গী ছিল রোমিও আর জুলি। ‘অপারেশন দোস্ত’ -এর সদস্য ছিল তারা জুলি। সেখানে উদ্ধারকাজের সময়ে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আটকে থাকা এক তরুণীকে উদ্ধারে সাহায্য করেছিল জুলি।
দেশের প্রায় প্রতিটি পুলিশ বিভাগেই এর মধ্যে থাকে সারমেয়দের জন্য বিশেষ বিভাগ, যাকে বলা হয় ডগ স্কোয়াড। এই স্কোয়াড বিভিন্ন সময়ে অসাধ্য সাধন পর্যন্ত করে ফেলে। অপরাধীকে পাকড়াও করতে এদের জুড়ি নেই। খুনের ঘটনার কিণারা করতেও এদের সাহায্য নিয়ে থাকেন গোয়েন্দারা। বিস্ফোরক দ্রব্য খুঁজে বের করতেও সাহায্য করে। আর এই ডগ স্কোয়াডের একটা বিশেষ দক্ষতা হল, এরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে জীবিত মানুষের খোঁজ দিতে পারে। সোজা কথায় ‘লাইফ ডিটেক্ট’ করতে পারে ডগ স্কোয়াড।
এনডিআরএফ (NDRF)-এর দ্বিতীয় ইউনিট তথা কলকাতায় এনডিআরএফের হাতে সেরকমই দুই সারমেয় রয়েছে। এই রোমিও আর জুলির বয়স প্রায় সাড়ে ৭ বছর। গার্ডেনরিচে উদ্ধারকাজে বড় ভূমিকা নিয়েছিল তারা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে ঘ্রাণের সাহায্যে তারা শণাক্ত করেছে কোথায় কোথায় আটকে আছেন মানুষজন। সেই মতো সেই জায়গায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে উদ্ধারও করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।