
কলকাতা: দুই ভাই কলকাতা শহরের নামী ব্যবসায়ীদের তালিকাভুক্ত। এবার তাঁদের বাড়িতেই ইডি হানা। মঙ্গলবার সাতসকালে শহরে তৎপর ইডি। পুর-দুর্নীতির অভিযানের এটা আরেক পর্ব। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন আলো ফুটতেই বেলেঘাটার ৭৫ নম্বর হেমচন্দ্র নস্কর রোডে একটি বাড়িতে অভিযান চালায় তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়িতে পৌঁছে যায় ৬ ইডি আধিকারিক।
সকাল সকাল অভিযানে বেরনোর জেরে অনেকক্ষণই বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করতে হয় তদন্তকারীদের। বাড়ির লোহার গেটে ক্রমাগত ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করতে দেখা যায় তাঁদের। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে সাড়া দেয় না কেউই। এই ভাবে কেটে যায় অনেকটা সময়। তখনই পাশের এক আবাসন থেকে ছুটে আসেন এক নিরাপত্তারক্ষী। ইডি আধিকারিকরা তাঁকে পরিচয় দিলে, তিনিই বাড়ির দরজা খুলে দেন। আপাতত বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেছেন ইডি আধিকারিকরা।
তবে সাতসকালে ঠিক কী কারণে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়েছেন তাঁরা? সূত্রের খবর পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমেই ওই অভিযান চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। আর শুধুই বেলেঘাটা নয়, এদিন শহরের আরও ৪টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে ইডি। পুর-দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত লিঙ্কম্যানদের খুঁজতেই এই তল্লাশি অভিযান।
উল্লেখ্য়, বেলেঘাটার হেমচন্দ্র নস্কর রোডের ওই বাড়ির মালিক অর্থাৎ দুই ভাই পেশায় ব্যবসায়ী। নাম বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও রণজিৎ চৌধুরী। বিশ্বজিৎ চৌধুরী অর্থাৎ বড় ভাইয়ের একটি কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে। অন্যদিকে রঞ্জিত চৌধুরী যুক্ত রয়েছেন নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে। এবার ঠিক কার বিরু্দ্ধে তদন্তে নেমে মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালালেন ইডি আধিকারিক, তা এখনও জানা যায়নি। এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রণজিৎ চৌধুরীকে। তিনি জানান, ‘ঠিক কী কারণে তদন্ত, কোন মামলা, কিছুই জানি না। ওরা এখনও আমাদের কিছুই বলেননি। আমরা দুই ভাই পেশায় ব্যবসায়ী। আমার ১৯৯৬ সাল থেকে রিয়েল এস্টেটের ও কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা রয়েছে। ইতিমধ্যে পুরীতেও দু’টি হোটেল খুলেছি।’
মাঝে সময়ের ব্য়বধান খুব একটা নয়। সম্প্রতিই রাজ্য়ের দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস ও দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান নিতাই দত্তের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিক। তাঁরা হানা দিয়েছিলেন সুজিত বোসের ছেলের রেস্তোরাঁতেও। তা হলে কি সেই অভিযান থেকেই উঠে এল আজকের লিঙ্কম্যানদের সূত্র? ইডি তরফে জানান হয়েছিল, মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি, ডিজিটাল ডিভাইস ও হিসাব দিতে না পারা ৪৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল তাঁরা।