কলকাতা: সাম্প্রতিক কয়েক বছরে লাফিয়ে বাড়ছে মামলার সংখ্যা। তাল মিলিয়ে বেড়েছে কর্মীর সংখ্যাও। তাই এবার সল্টলেকের ডিএফ ব্লকে সিজিও কমপ্লেক্সেই (CGO Complex) নতুন অফিস নিচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ইডি বিভিন্ন মামলার তদন্তের অগ্রগতি এবং কলকাতার শীর্ষ ইডি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য কলকাতায় এসেছেন ইডির অধিকর্তা সঞ্জয় মিশ্র। তার উপস্থিতিতেই নতুন অফিসের হস্তান্তর হবে বলে সূত্রের খবর।
জানা যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে ইডির কাজের পরিধি এ রাজ্য সহ পূর্বাঞ্চলে আরও বাড়তে চলেছে। সেই কারণেই নতুন অফিস নিচ্ছে ইডি। কলকাতায় ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সের তৃতীয় এমএসও বিল্ডিংয়ের সাততলায়। ওই ভবনের সাততলার একটা গোটা উইং জুড়ে বর্তমানে রয়েছে ইডির অফিস। ২০১৯ সালে তদন্ত এবং বাকি কাজ মসৃণ করতে কলকাতার দফতরকে দুটি জোনে ভাগ করা হয়। প্রতিটি জোনের নেতৃত্বে একজন যুগ্ম অধিকর্তা পদমর্যাদার আধিকারিক। তাদের মাথায় গোটা কলকাতা দফতরের কাজ দেখার জন্য রয়েছেন স্পেশ্যাল ডিরেক্টর।
ইডি সূত্রে খবর, দুটি জোন ভাগ করার পর ধাপে ধাপে তদন্তকারীআধিকারিকদের সংখ্যা বেড়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বিভিন্ন পদে অধস্তন কর্মীদের সংখ্যাও। কিন্তু বাড়েনি অফিসের জায়গা।
এর ফলে বিভিন্ন সময়ে কাজের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন আধিকারিকরা। সারদা মামলার তদন্তের সময় অভিযুক্তদের হেফাজতে রাখার জন্য তড়িঘড়ি মেক শিফ্ট লক আপও তৈরি করা হয়। কিন্তু সেই লক আপ-এর মান খুব ভাল নয়। এক সঙ্গে বেশি অভিযুক্তদের রাখার জন্য পর্যাপ্ত ব্যাবস্থাও নেই বর্তমান অফিসে। সম্প্রতি মামলার চাপ বাড়তে থাকায় তদন্ত সংক্রান্ত বিপুল নথি রাখা নিয়েও সমস্যায় পড়ছেন আধিকারিকরা। এরপর একদফা পাশের এমএসও বিল্ডিয়ের সাততলাতেও ইডির অফিস নেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও স্থান সঙ্কুলান হয়নি।
সেই সমস্যা দূর করতে ওই একই বাড়ির দোতলায় নতুন অফিস করছে ইডি। সূত্রের খবর, তৃতীয় এমএসও বিল্ডিংয়ের দোতলায় বাঁদিকের উইংয়ে ছিল ন্যাশনাল অ্যাটলাস অ্যান্ড থেমাটিক ম্যাপিং অর্গানাইজেশনের (ন্যাটমো)- ক্যান্টিন। সেই ক্যান্টিনের জায়গা নিচ্ছে ইডি। সেখানে অফিস হবে। ন্যাটমোর সেক্টর ফাইভে নিজস্ব বাড়ি থাকায় অধিকাংশ দফতরই চলে গিয়েছে সেক্টর ফাইভে। তাই ওই ক্যান্টিন বন্ধই ছিল। সূত্রের খবর, ইডির তৃতীয় এমএসও বিল্ডিয়ের সাততলার জায়গার সমান ন্যাটমোর ওই ক্যান্টিন।
নতুন জায়গা নেওয়ার পাশাপাশি অফিসে নজরদারিও বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই বর্তমানে দুটি অফিস সিসিক্যামেরার নজরদারিতে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। দুটি অফিস মিলিয়ে ৪৪ টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রতিটি ক্যামেরার নাইট ভিশন রয়েছে। ১০ মিটার পর্যন্ত স্পষ্ট ছবি তুলতে পারে এই ক্যামেরাগুলি। দু’ঘণ্টার পাওয়ার ব্যাক আপ সহ ৩২ চ্যানেলের নেটওয়ার্ক ভিডিও রেকর্ডার কেনা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা গুলি ১৮ মাস পর্যন্ত সমস্ত তথ্য মজুত করে রাখার প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় মানের।
সূত্রের খবর, এই তৃতীয় অফিসেও একই ভাবে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হবে। অভিযুক্তদের রাখতে তৈরি করা হবে নতুন লকআপও, যাতে একসঙ্গে একাধিক হাই প্রোফাইল অফিযুক্তকেও রাখতে কোনও সমস্যা না হয়।