কলকাতা: আপাতত পুলিশ হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে কসবা ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেব ও তাঁর দুই সঙ্গীকে। মঙ্গলবার ধৃতদের ৫ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। সোমবার রাতে শরৎ পাত্র এবং কাঞ্চন দেবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার দেবাঞ্জন-সহ বাকি দুই ধৃতকে আদালতে তোলা হলে সেখানে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন দেবাঞ্জনের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য।
প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, ভুয়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্প, মাস্ক-স্যানিটাইজার বিলির যে বিপুল খরচ তার টাকা দেবাঞ্জন কোথায় পেলেন? এদিন আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, দেবাঞ্জনের গানের সিডি রয়েছে। সেখান থেকে তিনি যে রয়্যালটির টাকা পান তা দিয়েই ভ্যাকসিন কিনতেন। দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যের দাবি, “দেবাঞ্জন খুবই ভাল মনের মানুষ। উনি যা করেছেন মানুষের কথা ভেবেই করেছেন। কেউ দেখাতে পারবেন না একটা টাকাও দেবাঞ্জন কারও কাছ থেকে নিয়েছেন। তাঁর মানসিকতা ভাল। বিএসসির ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট স্টুডেন্ট উনি।”
একইসঙ্গে দেবাঞ্জনের আইনজীবী সংবাদমাধ্যমের উপরও খানিক উষ্মা প্রকাশ করেন। বিভিন্ন মাধ্যমে দেবাঞ্জন সম্পর্কে খবরগুলি সামনে আসায় অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন সমস্যায় পড়ছেন বলেও দাবি করেন তিনি। দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “ওনার বাবা অসুস্থ। ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। বাড়ির লোকজন বাইরে যেতে পারছেন না। দোকান বাজার করতে সমস্যা হচ্ছে। এমনকী দেবাঞ্জনের আত্মীয়রাও এখন ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ করছেন। এতদিন কোথায় ছিলেন?”
দিব্যেন্দুবাবু বলেন, মনঃকষ্টে ভুগছেন দেবাঞ্জন। আইনজীবীর কথায়, “দেবাঞ্জনের সঙ্গে কথা বলে যেটা বুঝেছি ওনার সবথেকে খারাপ লাগার বিষয়… যেটা উনি বলছেন, এতগুলো কর্মী তাঁর থেকে নিয়মিত বেতন নিতেন। মাসের পর মাস। আজ তারা বিরোধিতা করছে। আমার মনে হয় দেবাঞ্জন পরিস্থিতির শিকার।” আইনজীবীর অভিযোগ, দেবাঞ্জনের দেহরক্ষীরা সমস্ত কিছু জানতেন। এখন মুখ খুলছেন। এতদিন চুপচাপ ছিলেন।
আরও পড়ুন: এক ক্লিকেই দেবাঞ্জনের সব কীর্তিকলাপ
এদিন আদালত কক্ষে দেবাঞ্জনের আইনজীবী বলেন তাঁর মক্কেলের মনরোগের সমস্যা রয়েছে। যদিও এ সংক্রান্ত কোনও যথাযথ তথ্য তিনি পেশ করতে পারেননি। এর পক্ষে আইনজীবীর যুক্তি, “অভিযুক্ত কাস্টডিতে। তাঁর কাছ থেকে কোনও কাগজ নেওয়া সম্ভব হয়নি।”