ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড শহরে। কলকাতার রাজডাঙার কাছে অ্যাক্রোপলিস শপিং মলে ভয়াবহ আগুন। মলের ভিতর থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরতে দেখা যাচ্ছে। ঘটনার সময় ভিতরে ছিলেন বহু মানুষ। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন তাঁরা। অগ্নিনির্বাপণের কাজ শুরু হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সাততলার অফিস থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বেরন বেসরকারি সংস্থার মালিক অজয় আগরওয়াল। সেই সকল কর্মীদের মধ্যেই ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা মমতা সাহু। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বিস্তারিত পড়ুন: ঝাঁ চকচকে অ্যাক্রোপলিস মলের সিঁড়ির এ কী হাল! অন্ধকারে লোহার রড-আবর্জনা পেরিয়ে নামার অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর
অগ্নিকাণ্ডের সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন হাজার হাজার মানুষ। ১২ ফুটের সিঁড়ি আবর্জনায় ভরা। সিঁড়ি জুড়ে সিমেন্টের বস্তা, আবর্জনা, জঞ্জাল। কুণ্ডলি পাকানো ধোঁয়ার মধ্যে নামতে গিয়ে চোট পান অনেকে।
২২ তলা থেকে সংকীর্ণ সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ১৪ তলায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এক গর্ভবতী মহিলা। আটকে পড়েন দুই প্রতিবন্ধীও।
শপিং মলের পাশেই আছে গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম। মল থেকে বেরিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। এদিকে, হাইড্রলিক ল্যাডার নিয়ে উদ্ধারের কাজ করছেন দমকলের কর্মীরা।
কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে, তাই দমকলের তরফ থেকে পুলিশের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে যান চলাচল বন্ধ রাখতে। এরপরই পুলিশ ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতা থেকে ইএম বাইপাসে যাওয়ার রাস্তা এটি। ফলে কর্মব্যস্ত দিনের সকালে বহু গাড়ি যাতায়াত করে। এই ঘটনার জেরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক যানজট।
কাচে ঘেরা মল কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। বদ্ধ পরিবেশে ধোঁয়াই হয়ে উঠেছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। দমকলের কর্মীরা কাচ ভেঙে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। ধোঁয়া ক্রমশ বাড়ছে।
বহুতল এই বিল্ডিং-এ প্রচুর কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেই সঙ্গে শপিং মলে ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়তে শুরু করেছিল। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার অ্যালার্ম বাজতে শুরু করে। দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতে শুরু করেন কর্মী থেকে ক্রেতা সবাই। ফলে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা পৌঁছেছেন ঘটনাস্থলে।
প্রথমে ৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে দেরী হওয়ায় পরে সেই ইঞ্জিনের সংখ্যা বেড়ে হয় ১০। অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মলের ভিতরে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে দমকলকর্মীদের।
জনবহুল রাস্তার একেবারে পাশেই রয়েছে এই অ্যাক্রোপলিস মল। ব্যস্ত সময়ে সেই মলে আগুন লাগায় আতঙ্কে ছড়িয়েছে পথচারীদের মধ্যেও। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মলে ভিতর থেকে পরপর বেরিয়ে আসছেন মানুষজন।
সকালে আগুন লাগার পরই দমকলে খবর দেয় শপিং মল কর্তৃপক্ষ। একে একে দমলকের ইঞ্জিন যায় ঘটনাস্থলে। খবর যায় দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর কাছেও। তিনি জানিয়েছেন, আতঙ্কের কোনও কারণ আছে কি না, তা এখনও তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। তবে খবর পেয়েছেন তিনি।
সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আগুন লাগে। দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় শপিং মল এটি। এখানে রয়েছে বহু নামী ব্র্যান্ডের শোরুম। ওপরে রয়েছে বড় ফুড কোর্ট। সেই ফুড কোর্টেই আগুন লাগে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ক্রমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে মলের ভিতরে। তবে দাহ্য পদার্থ না থাকলে আগুন ছড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিল্ডিং-এ রয়েছে একাধিক অফিস।