কলকাতা: কেন্দ্রীয় সংস্থার জালে আরও এক মন্ত্রী। এবার রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হল রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। প্রায় ২১ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ৩ টে ২০ মিনিটে তাঁকে তাঁর বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। সম্প্রতি এই মামলায় বাকিবুর রহমান নামে এক রেশন ডিলার গ্রেফতার হওয়ার পরই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র নাম সামনে আসে। আর পুজো শেষ হতেই বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি-র টিম। তাঁর সল্টলেকের দুটি বাড়িতে চলে ম্যারাথন তল্লাশি। গভীর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছর গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার ফের রাজ্যের মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হল।
গতকাল, বৃহস্পতিবার সাত সকালে জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি-র টিম। সল্টলেকে তাঁর পাশাপাশি দুটি বাড়ি রয়েছে। সেখানে প্রথমে শুরু হয় তল্লাশি। পরে বেনিয়াটোলের বালুর পৈতৃক বাড়িতেও হাজির হয় কেন্দ্রীয় সংস্থার অপর একটি টিম। মন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক অমিত দে-র বাড়িতেও তল্লাশি চলে। তবে তাঁর বাড়ি থেকে রাত ১২ টা নাগাদ বেরিয়ে যান আধিকারিকরা।
তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রীর বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। অন্তত ১০ সেকশন বাহিনী ছিল তাঁর বাড়ির সামনে। রাত ২ টো-র পর থেকেই গ্রেফতারির তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় বলে সূত্রের খবর।
রাত ২ টো ৪৫ মিনিটে জ্যোতিপ্রিয়র বাড়ির সামনে প্রস্তুত হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। ২ টো ৫৫ মিনিটে ইডি-র গাড়ি গিয়ে দাঁড়ায় মন্ত্রীর বাড়ির সামনে, রাত ৩ টে ২০ মিনিটে বাড়ির ভিতর থেকে বের করা হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সের দিকে নিয়ে যায় ইডি।
উল্লেখ্য, জ্যোতিপ্রিয়র বাড়িতে যখন ম্যারাথন তল্লাশি চলছে, তখন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। শুধু তাই নয়, মন্ত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা পর্যন্ত প্রকাশ করেন তিনি। গলায় উদ্বেগ নিয়ে মমতা বলেন, “বালু অসুস্থ। ও যদি মরে যায় তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে হবে, ইডির বিরুদ্ধেও অভিযোগ করতে হবে।” মমতার এই বার্তার কয়েক ঘণ্টা পরই গ্রেফতার করা হল মন্ত্রীকে।