Geeta Jayanti: যদা যদা হি ধর্মস্য… ডিসেম্বরের ব্রিগেডে এবার লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন
Geeta Sloka: যদিও এই লক্ষ-কন্ঠে গীতাপাঠের আড়ালে রাজনীতির চমক দেখছে সিপিএম, তৃণমূল। তাদের দাবি, পরের বছর লোকসভা ভোট। তার আগে এই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে সামনে রেখে হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়াতে চাইছে বিজেপি।

কলকাতা: ব্রিগেড মানেই রাজনৈতিক দলগুলির শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্র। এবার সেই ব্রিগেডের মাঠে ধ্বনিত হবে ধর্মগ্রন্থ গীতার শ্লোক। জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ ও কর্মযোগের ত্রিবেণীসঙ্গম গীতার প্রতিটি শ্লোকের আধার। সেখানেই লুকিয়ে মানব জীবনের দৈনন্দিন যাপনের সার কথা। এবার সেই ভগবত গীতা লক্ষ কন্ঠে পাঠ করা হবে কলকাতায় ব্রিগেডের মাঠে। আয়োজন করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর (RSS) শাখা অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ। সূত্রের খবর, এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হবে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও।
খাস কলকাতায় বসে ১ লক্ষ কন্ঠে গীতা পাঠ। আর তার মাধ্যমেই সনাতনী হিন্দু সংস্কৃতি বোধকে জাগরিত করার উদ্য়োগ নিয়েছে অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ। আগামী ২৪ ডিসেম্বর এই অনুষ্ঠান হবে। প্রায় তিন ঘণ্টা এই গীতা পাঠ চলবে। ব্রিগেডের মাঠ যেহেতু ফোর্ট উইলিয়ামের (ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্ব ভারতের সদর দফতর) আওতাধীন, তাই এখানে কোনও কর্মসূচি নিতে গেলে সেনার অনুমতি প্রয়োজন হয়।
সূত্রের খবর, সেনার তরফে সেই অনুমতি ইতিমধ্যেই তারা পেয়েছে। দেশের রাষ্ট্রপতি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এই অনুষ্ঠানে যেমন আমন্ত্রিত থাকছেন। আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরেও। মূলত গীতার পাঁচটি অংশ পাঠ করবে লক্ষ কন্ঠ।
অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদের তরফে গৌরব মহারাজ বলেন, “গীতার প্রধান পাঁচটি অধ্যায় পাঠ করব। মোট তিন ঘণ্টা চলবে। এক লক্ষ সমবেত কন্ঠে এই পাঠ হবে। প্রথমে ঠিক করেছিলাম রাষ্ট্রপতি ও দ্বারকা শঙ্করাচার্যকে আমন্ত্রণ জানাব। পরে আরও কয়েকজন ঠিক হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে তো আমরা জানাবই। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ থেকেও মানুষ আসবেন। ৫-৭ হাজার লোক বাইরে থেকে আসবেন। ২৪ ডিসেম্বর গীতা জয়ন্তীর মধ্যে এটা হবে।” এর আগেও একাধিক জায়গায় তারা গীতাপাঠের আয়োজন করেছে। মায়াপুর, তারাপীঠেও সহস্রাধিক কন্ঠে সেই গীতাপাঠ হয়েছে। তবে লক্ষ কন্ঠে প্রথমবার।
যদিও এই লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠের আড়ালে রাজনীতির চমক দেখছে সিপিএম, তৃণমূল। তাদের দাবি, পরের বছর লোকসভা ভোট। তার আগে এই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে সামনে রেখে হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়াতে চাইছে বিজেপি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পশ্চিমবাংলার রাজনীতিকে ধর্মান্ধতায়, সাম্প্রদায়িকতায় ভরিয়ে দেওয়ার জন্য বিজেপি প্রস্তুত। ওদের সেটাই কাজ। আর এই বিজেপিকে প্রশ্রয় দিয়ে পশ্চিমবাংলায় টেনে এনেছে তৃণমূল। আরএসএসকে দেশপ্রেমিকও আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই বলেছেন। ফলে আরএসএস এগুলো করবে কি না জানি না। তবে এসব যখনই হবে মানুষ জানতে চাইবে বছরে ২ কোটির চাকরির প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল?”
অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, “গীতাকে রাজনীতির মধ্যে ফেলবেন না। আর লক্ষ কন্ঠ কেন? গীতা তো কোটি কন্ঠে ধ্বনিত হয়। আরএসএস কি গীতাকে সঙ্কুচিত করে ফেলছে?” এ নিয়ে পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর বক্তব্য, “গীতা পাঠ তো খুবই ভাল বিষয়। কিন্তু হঠাৎ করে এ রাজ্যে লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন করার তো কোনও প্রয়োজন ছিল না।”
