এটিএম জালিয়াতিতে মিলেমিশে ছিল কলকাতা-সুরাট? চারজনকে জালে ধরে জানতে মরিয়া লালবাজার

Jun 06, 2021 | 5:14 PM

গত মাস থেকে কাশীপুর, নিউমার্কেট ও যাদবপুর, বউবাজার-সহ একাধিক এটিএম (ATM) থেকে একই কায়দায় টাকা চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছিল লালবাজার।

এটিএম জালিয়াতিতে মিলেমিশে ছিল কলকাতা-সুরাট? চারজনকে জালে ধরে জানতে মরিয়া লালবাজার
নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

কলকাতা: শহরের এটিএম (ATM) জালিয়াতিকাণ্ডে গ্রেফতার চার। সুরাট থেকে গ্রেফতার মনোজ গুপ্তা, নবীন গুপ্তা। এঁরা মূলত দিল্লির বাসিন্দা। কলকাতা থেকে গ্রেফতার বিশ্বদীপ রাউত ও আব্দুল সইফুল মণ্ডল। কলকাতা থেকে ধৃত দু’জনকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্বদীপের কসবায় একটি মোবাইলের দোকান রয়েছে। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সম্প্রতি একটা মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়েছিল। পুলিশ সেই টাকা লেনদেনের সূত্র ধরেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপরই বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে। তাঁকে গ্রেফতারির পাশাপাশি বাকি তিনজনকেও ধরা হয়।

পুলিশের অনুমান, বিশ্বদীপ এই জালিয়াত চক্রে লোকাল অ্যাসিসট্যান্ট হিসাবে কাজ করত। এলাকার মধ্যে কোন কোন এটিএমগুলিতে কারসাজি করা যেতে পারে, ভূতুড়ে ভাবে টাকা তোলা যেতে পারে সেই খবরাখবর দিত। পুলিশ মূলত জানতে চায়, কলকাতার দুই ধৃতের সঙ্গে এটিএম দেখভাল ও টাকা ভরার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কোনও যোগসাজশ ছিল কি না।

পুলিশ মনে করছে কোনও ভাবে পুরনো তথ্যপ্রযুক্তি দ্বারা চালিত এটিএম গুলিই এই জালিয়াতদের নজরে ছিল। পুলিশ জানতে চায় বিশ্বদীপ ও সইফুলই কি এই এটিএমগুলি চিহ্নিতকরণের দায়িত্বে ছিল? নাকি আরও কেউ লুকিয়ে রয়েছে যাঁদের হাত ধরে এই জালিয়াতরা নিজেদের জাল বিছিয়ে ছিল। লালবাজারের গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে ময়দানে নেমেছে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার জেরা চলছে তাঁদেরও।

পাশাপাশি সুরাট থেকে ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা আনার পর তাঁদেরও জেরা করা হবে। চারজনকে মুখোমুখি বসিয়ে ঘটনার কিনারা করতে চায় পুলিশ। পাশাপাশি কিং পিনকেও ধরতে বদ্ধপরিকর তারা। কারণ এমন ভূতুড়ে কায়দায় এটিএম লুঠ কার্যত নজিরবিহীন। কোনও কার্ড সোয়্যাপ না করে, মেশিন না ভেঙে কী ভাবে এই টাকা লুঠ হত তা জানতে চায় পুলিশ।

গত ২২ মে থেকে ২৮ মে-এর মধ্যেই কাশীপুর, নিউমার্কেট ও যাদবপুরের তিনটি এটিএম থেকে একই কায়দায় টাকা চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছিল লালবাজার। কাশীপুর, নিউমার্কেট এবং যাদবপুরের এটিএম থেকে যথাক্রমে ৭ লক্ষ, ১৮.৮ লক্ষ এবং ১৩.২ লক্ষ টাকা উধাও হয়েছে। এরপর বউবাজারেও একই ঘটনা ঘটে।

নয়া কায়দায় শহরে এটিএম জালিয়াতি গত কয়েক দিনে ঘুম উড়িয়েছে পুলিশ আধিকারিকদের। শহরের এটিএমগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, নতুন একটি যন্ত্রের সাহায্যে চলছে এই জালিয়াতি। যার সাহায্যে এটিএম থেকে টাকা বের করে নিচ্ছে একটি চক্র। চুরির সময় ব্যাঙ্কের সঙ্গে লিঙ্ক ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এটিএম-এর। এটিএম থেকে টাকা চুরি হলেও কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা যাচ্ছে না।

Next Article