কোভিডে ঝোপ বুঝে কোপ, এক মাসে ৩০ লক্ষ টাকার বিল বেসরকারি হাসপাতালে

Jun 17, 2021 | 7:17 PM

রাজারহাট পূর্বাচলের বাসিন্দা আকাশ গুপ্ত। গত ১১ মে করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হন তিনি। ১৬ তারিখ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কাঁকুরগাছির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

কোভিডে ঝোপ বুঝে কোপ, এক মাসে ৩০ লক্ষ টাকার বিল বেসরকারি হাসপাতালে
নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

কলকাতা: বাড়ির ছেলে করোনা (COVId-19) আক্রান্ত। বেসরকারি হাসপাতালে হু হু করে বাড়ছে চিকিৎসার বিল। ইতিমধ্যেই গাড়ি, বাড়ি বিক্রি করেছে পরিবার। হাত পড়েছে জমানো টাকায়। পরিজনদের কাছে ধারের ভারও উপচে পড়ছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার মাত্রাছাড়া বিলের বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিল স্বাস্থ্যভবন। আকাশ গুপ্ত নামে এক করোনা রোগীর চিকিৎসায় সম্প্রতি শহরের দুই বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা বিল ধরানো হয়। চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। এরপরই টিভি নাইন বাংলা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়। তার জেরে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগ এলে তারা ঘটনা খতিয়ে দেখবে।

রাজারহাট পূর্বাচলের বাসিন্দা আকাশ গুপ্ত। গত ১১ মে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। ১৬ তারিখ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কাঁকুরগাছির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানে আকাশের প্রায় ৭ লক্ষ টাকার বিল হয়। কিন্তু এরইমধ্যে আকাশের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

২৯ মে সেখানে ভর্তি করা হয় আকাশকে। একমো সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। কিন্তু দুই চিকিৎসাকেন্দ্রে যে খরচ তা এখনই প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। ইতিমধ্যেই সেই টাকা মেটাতে ওই পরিবারকে জমানো সঞ্চয়ে হাত দিতে হয়েছে। বাড়ির গাড়ি বিক্রি করা হয়েছে। নিউটাউনে তাঁদের একটি ফ্ল্যাট ছিল তাও ১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করছেন তাঁরা। বর্তমানে যে বাড়িতে থাকেন সেটিও বিক্রির কথা ভাবছেন।

করোনাকালে দিনকে দিন কঠিন লড়াই লড়তে হচ্ছে মানুষকে। সুস্বাস্থ্যের ন্যূনতম অধিকারটুকুও সুরক্ষিত নেই। কতটা কঠিন পরিস্থিতি হলে প্রিয়জনকে বাঁচাতে সর্বস্ব বিক্রি করতে হয় পরিবারকে। যদিও এ স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রোগীর পরিবার যদি মনে করে বিলটা বেশি হয়েছে আমরা আছি। আমরা সবসময় সজাগ। বিল নিয়ে আমাদের কাছে এলে আমরা খতিয়ে দেখব। আমাদের যে কোনও সময় অভিযোগ জানানো যায়। রোগীর ছুটি হয়ে গেল, তখন বিল বেশি জানাতে হবে এমন নয়। রোগী ভর্তি রয়েছেন, অথচ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে মনে হলেও আমাদের জানান। এ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তা এলে নিশ্চয়ই আমরা খতিয়ে দেখব।”

আরও পড়ুন: ত্রিপুরা ‘উদ্ধারে’ মুকুল-অস্ত্রেই ধার তৃণমূলের, ঘর বাঁচাতে আরএসএসের শরণে বিজেপি

একইসঙ্গে অসীমবাবুর বক্তব্য, “প্রথম হাসপাতালে ১৪ দিন ভর্তি থাকার পর ৭ লক্ষ টাকা বিল হয়েছিল বলে শুনলাম। বিলটা ঠিক না ভুল তা বিল না দেখে বলা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত, একমোয় চিকিৎসা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ। তবে ওনাদের যদি বিলের কোনও সমস্যা হয় নিশ্চয়ই আমরা আছি। কিন্তু সরকারি ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিখরচায়। তবে বেসরকারি ক্ষেত্রে পরিষেবা নিতে গেলে খরচটা তো বিষয় হয়েই দাঁড়ায়।”

Next Article