
কলকাতা: বাবরি মসজিদ তৈরি করবেনই হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারের পর এবার তিনি নিজের রাজনৈতিক দল গঠন করছেন। আগামী ২২ ডিসেম্বরই তাঁর নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। হুমায়ুনের লক্ষ্য একটাই, ১৩৫টি আসনে লড়ে তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)-কে হারানো এবং বিজেপি(BJP)কে ক্ষমতায় আসা থেকে আটকানো। নিজের দল নিয়ে বড় আপডেট দিলেন হুমায়ুন।
এ দিন হুমায়ুন কবীর বলেন, “নতুন দলের ৭৫ জনের স্টেট কমিটি ঘোষণা হবে। আর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা হবে। ৪ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ঘোষণা। ১৩৫টি আসনেই লড়ব। মুর্শিদাবাদ, মালদা, দুই দিনাজপুর, বর্ধমান, নদিয়া, বীরভূম, মেদিনীপুর সহ নানা জেলাগুলিতে কথা চলছে, মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে এবং তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার দলে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমি তাদেরকে গুরুত্ব সহকারে আহ্বান জানাচ্ছি। সবার জন্য দরজা খোলা। আমরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোক।”
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি বা ভোট কাটাকাটি হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে হুমায়ুন বলেন, “আমি কারোর ভাগ বসাব না। আমি নিজে মুসলিমদের অধিকার বুঝে নিতে ১৩৫টি আসনে লড়ে বিধানসভায় ৭০ থেকে ৯০টি সিট জিতে আসব। নির্ণায়ক শক্তি হুমায়ুন কবীরের পার্টি হবে, এ কথা বলে রাখলাম।“
কী কী পরিকল্পনা রয়েছে নতুন দল নিয়ে? হুমায়ুন বলেন, “আমার যখন পার্টি তৈরি হয়ে যাবে, তখন আগামিদিনের কর্মসূচি জানতে পারবেন। ১০০০-১২০০ টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেব। ১ লাখ ২০ হাজার টাকা গ্রামের লোকেদের বাড়ি তৈরির জন্য দেব। শহরতলিতে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা করে দেব। দিদির পার্টির নেতারা কীভাবে টাকা নিজেদের পকেটে পুড়ছে, তা সকলের সামনে আনব। তারপর মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে।”
তাহলে কি জোট করবেন হুমায়ুন? তিনি বলেন, “বিরোধীরা অনেক কিছুই বলবে। আগামিদিনে কার সঙ্গে যাব, কার সঙ্গে লড়ব, তা পরে জানা যাবে। আমি তৃণমূলকে হারাতে চাই, বিজেপিকে ক্ষমতায় আসা থেকে আটকাতে চাই। আমার কাছে বাম-কংগ্রেস বলে শুধু কথা নয়, আমার যে লক্ষ্য, এই এজেন্ডা নিয়ে আমি মানুষের কাছে যাব। যার ইচ্ছা আসবে। সেটা মিম হতে পারে, আইএসএফ হতে পারে, কংগ্রেস হতে পারে। আমার কোনও ছুৎমার্গ নেই। আমি তো অনেক উচু পদে আছি। আমি এমএলএ অবস্থায় দল করছি। মিম জিরো আছে, কংগ্রেস জিরো আছে, সিপিএমও জিরো। নওশাদও আছে। যে আসতে চাইবে, আসতে পারে।“
আসাউদ্দিন ওয়াইসি যোগাযোগ করেছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যে আমার কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রয়োজন নেই। একটাই টার্গেট, দল মানুষের সামনে আনা, ১৩৫টি আসনে লড়া। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে মিটিং করেছি নাকি পিএমও-র সঙ্গে মিটিং করেছি নাকি হোম ডিপার্টমেন্ট, তার প্রমাণ দিতে হবে।
হুমায়ুনের দলবদল করার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস, তারপর নির্দল, সেখান থেকে বিজেপি, আবার সেখান থেকে ফের তৃণমূলে ফিরেছেন। এই দলবদল এবং বিজেপির সঙ্গে গোপন যোগাযোগ নিয়ে হুমায়ুন বলেন, “আমি বিজেপিতে গিয়েছিলাম, তার কারণ ছিল। আমাকে যখন এই রাজ্য সরকারের পুলিশ, যিনি এখন বিধান নগরের পুলিশ কমিশনার, তিনি কোথায় ছিলেন জিজ্ঞাসা করবেন। এসপি মুর্শিদাবাদ। আর এলওপি যিনি রয়েছেন, তিনি কোথায় ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দিনাজপুরে তোলাবাজি করতেন। আমার টুঁটি চেপে ধরেছিল। তাই বিজেপিতে গিয়েছিলাম। সেখানেও দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ের পছন্দ ছিল না, তাই চলে এসেছি। এটা ইস্যু হবে না।”
২২ তারিখ ৪ লক্ষ মানুষের সমাগম করে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ করবেন ভরতপুরের বিধায়ক।