
কলকাতা: ৪০০-তে ৪০০। ISC-তেও যে এত নম্বর তোলা যায়, সেই নজিরই গড়েছেন বাংলার মেয়ে সৃজনী। দক্ষিণ কলকাতার রানিকুঠির বাসিন্দা সে। পড়াশোনা ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে। তবে শুধুই পড়াশোনা নয়, প্রতিবাদেও ‘এ ক্লাস’ সৃজনী। রাত দখল থেকে পহেলগাঁও হামলা সব ইস্যুতে খোলা মনে নিজের ধারণা সমাজের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি।
এমনকি, সমাজে ছড়িয়ে পড়া বিদ্বেষ, বর্ণ ও জাতি সমস্যার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে নিজের পদবি ব্যবহার করা ছেড়েছেন সৃজনী। শনিবার তিনি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানান, ‘এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভাবেই আমার নিজের নেওয়া। আমার পরিবারও তাতে আমাকে সমর্থন জানিয়েছে। আমি মনে করি, সমাজে বাড়তে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্মের ভিত্তিতে বাড়তে থাকা বিভেদ তুঙ্গে উঠেছে। কিন্তু আমার কাছে এই পদবির কোনও মানে নেই। আমাকে মানুষ সৃজনী বলেই চেনে। তাহলে এই পদবিটা বহন করার যৌক্তিকতাটাই বা কী?’
কিন্তু পদবি ছাড়া যে কারওর ধর্ম পরিচয় জানা সম্ভব নয়। সৃজনী জানিয়েছেন, তিনিও সেটাই চান। তাঁর কথায়, ‘আমি যে কোনও প্রকার ফর্মে নিজের ধর্মের জায়গায় মানবিকতা লিখি।’
সৃজনীর বাবা-মা উভয়েই যুক্ত রয়েছে অধ্যাপনার সঙ্গে। বাবা দেবাশিষ গোস্বামী বর্তমানে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক। অন্যদিকে, মা গুরুদাস কলেজের অধ্যাপনার কাজ করেন। মেয়ের এমন সাফল্যে উৎফুল্ল তারা।
এদিন পিটিআইকে সৃজনীর মা জানান, ‘আমার দুই সন্তানের মূল্যবোধ প্রশ্নাতীত। আমি কখনওই নিজের স্বামীর পদবি ব্যবহার করিনি। আমার মেয়ের জন্মের শংসাপত্র তৈরির সময়ও তাতে কোনও পদবির ব্যবহার করিনি। আমরা এমন একটা সমাজের স্বপ্ন দেখি, যা পুরুষতন্ত্র ও উগ্র কুসংস্কারের উর্ধ্বে।’