
নয়াদিল্লি: প্রতিনিয়ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় জড়িত ও ষড়যন্ত্রীদের বিচারের কাঠগড়ায় তুলতে বদ্ধপরিকর ভারত। হামলাকারীরা ছাড়া পাবে না বলে হুঙ্কার দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটিতে আঘাত হানল ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়েনের আবহে বুধবার (৭ মে) দেশের প্রায় আড়াইশো জায়গায় মক ড্রিলও হচ্ছে। ভারত কী কী পদক্ষেপ করছে, জেনে নিন প্রতি মুহূর্তের আপডেট…
বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। মাত্র ২৫ মিনিটের ‘অপারেশন সিঁদুর’। তারই মধ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জঙ্গি ঘাঁটিগুলি। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিরোধী দলগুলিকে বিস্তারিত জানাতেই এই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে।
ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের পর সীমান্তবর্তী একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভার্চুয়ালি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, বিহার, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীরাও বৈঠকে ছিলেন। জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের উপরাজ্যপালও ছিলেন শাহর সঙ্গে বৈঠকে।
ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরে পরিবারের বেশ কয়েকজনকে হারিয়েছেন জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান তথা পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী মাসুদ আজহার। বিবিসি উর্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের প্রত্যাঘাত প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার। সেই বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানিয়েছেন, বুধবার মাঝরাতে বাহওয়ালপুরে ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ার স্ট্রাইকে তাঁর মা-সহ পরিবারের দশ জনকে হারিয়েছেন। প্রাণ গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী, ভাইপো, ভাইঝি, পাঁচ সন্তান, বড় দিদি ও তার স্বামীর। এছাড়াও হামলায় নিহত হয়েছে মাসুদ ঘনিষ্ঠ চার জঙ্গি নেতাও।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়েছে। ৯টি জঙ্গিঘাঁটিকে নিশানা করা হয়েছে। সেগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও সাধারণ নাগরিকের কোনও ক্ষতি করা হয়নি। পাকিস্তানের সেনাঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়নি।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, পহেলগাঁওয়ে হামলার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। যারা পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন। সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তান জঙ্গিদের কাছে স্বর্গরাজ্য।
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, “পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনকে মারা হয়। তার মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় নাগরিক এবং একজন নেপালের বাসিন্দা। পরিবারের সদস্যদের সামনেই মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের বিকাশ ও প্রগতিকে ঠেকাতেই এই হামলা চালানো হয়।”
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ২ জন মহিলা সেনা অফিসার। সাংবাদিক বৈঠক করছেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ভোমিকা সিং। রয়েছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি।
ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন সীমান্তে বিনা প্ররোচনায় গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান সেনা। পুঞ্চ ও রাজৌরিতে সীমান্তে পাক সেনার গোলাবর্ষণে এখনও পর্যন্ত ১০ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জখম হয়েছেন ৩০ জন সাধারণ নাগরিক। সীমান্ত থেকে সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বদলা নিয়েছে ভারতীয় সেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। নিকেশ করা হয়েছে কমপক্ষে ১০০ জঙ্গিকে। ভারতীয় সেনার এই প্রত্যাঘাতকে কুর্নিশ জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “পহেলগাঁওয়ে আমাদের নিরীহ ভাইদের হত্যার জবাব হল ভারতের অপারেশন সিঁদুর। ভারত ও দেশের নাগরিকদের উপর যেকোনও হামলার উপযুক্ত জবাব দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মোদী সরকার। সন্ত্রাসবাদকে তার মূল থেকে উপড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর ভারত।”
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বদলা নিল ভারত। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দিল। নিকেশ হয়েছে কমপক্ষে ১০০ জঙ্গি। ভারতীয় সেনার এই ‘অপারেশন সিঁদুর’-কে সমর্থন করল ইজরায়েল। ভারতে ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে ইজরায়েল। সন্ত্রাসবাদীদের জানা উচিত, নিরপরাধীদের উপর হামলা চালানোর পর তাদের লুকানোর কোনও জায়গা নেই। “
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাব দিল ভারতীয় সেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় আঘাত হানা হয়। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি। জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের ফলে কমপক্ষে ১০০ জঙ্গি নিকেশ হয়েছে।
অপারেশন সিঁদুরের পর সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা এবং নৌসেনার প্রধানের সঙ্গে কথা বললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সূত্রের খবর, অপারেশন সিঁদুরের পর পরিস্থিতি নিয়ে তিন বাহিনীর প্রধানদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা। আর ভারতীয় সেনার এই অপারেশন সিঁদুর রাতভর নজর রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরই কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। হামলাকারী ও ষড়যন্ত্রকারীরা ছাড়া পাবে না বলে হুঙ্কার দিয়েছিলেন। গত কয়েকদিনে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরই বুধবার মধ্যরাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। জঙ্গিঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে রাতভর নজর রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাব দিল ভারতীয় সেনা। বুধবার মধ্যরাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় আঘাত হানল ভারতীয় সেনা। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করেই আঘাত হানা হয়েছে। পাকিস্তানের সেনার পরিকাঠামোয় কোনও আঘাত হানা হয়নি। ভারতীয় সেনার হানায় ৫০ জন জঙ্গি নিকেশ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। চন্দ্রভাগার জল বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বড় বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “ভারতের জল ভারতের স্বার্থেই ব্যবহার করা হবে।”
পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়েনের আবহে আগামিকাল অর্থাৎ ৭ মে মহড়া বা মক ড্রিলের দিন ধার্য করা হয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নাগরিকদের উপর যেন কোনও আঁচ না পড়ে, ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব সামাল দেওয়া যায়, সেই সব বিষয়কে মাথায় রেখেই আগেভাগে প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকি দেশে বিমান হামলা হলে কী পদক্ষেপ করতে হবে, তাও শেখানো হবে এই মক ড্রিলে। দেশের প্রায় আড়াইশো জায়গায় মক ড্রিল হবে। ১৯৭১ সালের পর এমন মক ড্রিল হচ্ছে দেশে।
পাকিস্তানের সঙ্গে তীব্র টানাপোড়েনের আবহে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ডোভাল। গত ৪৮ ঘণ্টায় এই নিয়ে দ্বিতীয়বার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন মোদী। আগামিকাল (৭ মে) দেশের ২৮৮টি এলাকায় মক ড্রিলের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তার আগে মোদীর সঙ্গে ডোভালের এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।