West Bengal Health Department: ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে সারা দেশকে পথ দেখাবে বাংলা, নেওয়া হচ্ছে বড় পদক্ষেপ

Sourav Dutta | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Jan 06, 2025 | 8:34 PM

HMPV: পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের জেরে অন্তত ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, ২০৫০ সালে ব্যাক্টিরিয়া জনিত সংক্রমণের কারণে প্রত্যক্ষ‌ বা পরোক্ষভাবে মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৩০ লক্ষ। সারা বিশ্বের ক্ষেত্রে ২০৫০ সালে এএম‌আরে মৃত্যুর আশঙ্কা ৩৯ কোটি মানুষের।

West Bengal Health Department: ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে  সারা দেশকে পথ দেখাবে বাংলা, নেওয়া হচ্ছে বড় পদক্ষেপ

Follow Us

কলকাতা: ভারতে ইতিমধ্যে HMPV ভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। শুধু দেশে নয় কলকাতাতেও যখন এক শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সদ্য নতুন ভাইরাসের আতঙ্ক যখন ধীরে-ধীরে ছড়াচ্ছে, সেই সময় ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে সারা দেশকে পথ দেখাতে চলেছে বাংলার গবেষণা সংস্থা। দেশের প্রথম ‘জীবাণু সংক্রমণ গবেষণা সংস্থার’ হাব তৈরি হচ্ছে বাংলায়। সেই লক্ষ্যে আইসিএম‌আর-নাইসেডের নাম বদলে হয়ে গেল আইসিএম‌আর-NIRBI অর্থাৎ ন্যাশানাল ইন্সস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন ব্যাকটেরিয়াল ইনফকশন (NATIONAL INSTITUTE FOR RESEARCH IN BACTERIAL INFECTIONS)।

সারা দেশে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে ব্যাক্টিরিয়া জনিত সংক্রমণের কারণে মৃতের সংখ্যা। সদ্যোজাত, প্রবীণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (AMR) অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগেও কাবু হচ্ছে না ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াই (KLEBSIELLA PNEUMONIAE), অ্যাসিনেটোব্যাক্টার বাউমনিয়াইয়ের (ACINETOBACTER BAUMANNI) মতো ব্যাক্টিরিয়া। দেশে প্রতি বছর এর কারণে সদ্যোজাতের মৃত্যুর সংখ্যা ৫৬ হাজার।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের জেরে অন্তত ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, ২০৫০ সালে ব্যাক্টিরিয়া জনিত সংক্রমণের কারণে প্রত্যক্ষ‌ বা পরোক্ষভাবে মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৩০ লক্ষ। সারা বিশ্বের ক্ষেত্রে ২০৫০ সালে এএম‌আরে মৃত্যুর আশঙ্কা ৩৯ কোটি মানুষের। চিকিৎসকদের মতে, এ‌এম‌আর এখন কার্যত ‘সাইলেন্ট এনডেমিকে’র আকার নিয়েছে। ক্রিটিক্যাল গোত্রের KLEBSIELLA PNEUMONAIE, PSEUDOMONAS, ACINETOBACTER BAUMANI , STAPHYLOCOCCUS-এর মতো ব্যাকটিরিয়া এখন ‘সুপারবাগ’ ( (যে সকল প্যাথোজেন একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের মোকাবিলায় অমরত্ব অর্জন করেছে)। ২০০১ সালে আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকেও দমন নেই এ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার। এমনকী, আইসিএম‌আরের সমীক্ষাতেও সুপারবাগদের ভয়াবহতার ছবি।

আইসিএম‌আরের তত্ত্বাবধানে ২০১৭-২০২৩ সালের মধ্যে দেশের ২১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে ANTIMICROBIAL RESISTANCE RESEARCH AND SURVEILLANCE NETWORK (IAMRSN)। ওপিডি, আইসিইউয়ের রোগীদের রক্ত, মূত্র-সহ অন্যান্য ফ্লুইডের নমুনায় মিলেছে সুপারবাগদের উদ্বেগজনক উপস্থিতি। এই ২১টি হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে এ রাজ্যের এস‌এসকেএম‌,‌ টাটা মেডিক্যাল সেন্টার।

ল্যান্সেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের‌ দাবি, ২০১৯ সালে এ দেশে সেপসিসে মৃত্যুর ৬০ শতাংশ‌ই ব্যাক্টিরিয়া জনিত সংক্রমণের কারণে। ২০১৯ সালে শুধু ব্যাক্টিরিয়া জনিত সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হয়েছে ৩ লক্ষ ২৫ হাজার শিশুর। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ২১২ জন শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী সুপারবাগ ‘STREPTOCOCCUS’

কী কাজ করবে NIRB?

দেশের একুশ হাসপাতালে সুপারবাগদের উপস্থিতির টের পেয়েই নাইসেড’কে ব্যাক্টিরিয়া দমনের গবেষণা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা নেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সারা দেশ থেকে পাঠানো নমুনা পরীক্ষা করে ‘সুপারবাগ’ ব্যাক্টিরিয়ার মোকাবিলায় অস্ত্র তৈরি করবে NIRB। নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসার সন্ধান দেবে এই সংস্থা। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করবে বাংলার গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও NIRB’এ তৈরি হবে বায়োসেফটি লেভেল থ্রি’র পরিকাঠামো।এককথায় NIRB হবে দেশের অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স হাব।

NIRB-র অধিকর্তা শান্তসবুজ দাস বলেন, “ব্যাকটেরিয়া যদি মেজর সমস্যা হিসাবে এসে থাকে। কেন তার জন্য নতুন প্রতিষ্ঠান হবে না? এটাই এখন সময়। এই অসুখের জন্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরির করার। এটা সারা দেশের মধ্যে একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা ব্যাক্টেরিয়া নিয়ে কাজ করবে।”

 

 

 

Next Article