কলকাতা: স্বামীর স্কুটির পিছনে বসে আড়াই বছরের মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন দেবশ্রী। বেপরোয়া বাস কেড়ে নিল প্রাণ। থেঁতলে যায় মুখের বাঁ পাশ। স্বামীও ততক্ষণে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় কাতরাচ্ছেন। কিন্তু প্রাণে বেঁচে গিয়েছে আড়াই বছরের ছোট্ট মেয়ে। শরীরে একটা আঁচড় পর্যন্ত লাগেনি তার। একেই হয়তো বলে বিস্ময়! কিন্তু কীভাবে ঘটল এই বিস্ময়? মঙ্গলবার সকালে যাদবপুর এইট বি বাসস্ট্যান্ডে মর্মান্তিক ঘটনা শুনে আবারও শহরবাসীর বুকে মোচড় দিচ্ছে।
গত বছরের শেষের দিকেই সল্টলেকে ঢোকার মুখেই বেপরোয়া বাস কেড়ে নিয়েছিল দুটো বাচ্চার প্রাণ। সেই ভয়াবহতায় স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল গোটা শহর। মঙ্গলবার সেরকমই একটা ঘটনার সাক্ষী থাকল। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপায় ছোট্ট আড়াই বছরের শিশু এক্কেবারে অক্ষত। কীভাবে হল?
সকালের রাস্তা এমনিতেই ফাঁকা ছিল। রাস্তার ধার দিয়ে স্ত্রী দেবশ্রী মণ্ডলকে পিছনে বসিয়ে স্কুটিতে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। দেবশ্রীর কোলেই ছিল তাঁর সন্তান। এইটবি বাসস্ট্যান্ড থেকে এস ৩১ রুটের একটি বাস ঝড়ের গতিতে বেরোচ্ছিল। পাশ কাটাতে গিয়েই স্কুটিতে ধাক্কা। ছিটকে পড়েন দেবশ্রী। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “তখন সকাল ৬টা ২০-২৫ বাজে। ততক্ষণে দুর্ঘটনা হয়ে গিয়েছে। বাসের গতি অনেক বেশি ছিল। বাস রেষারেষি করছিল। মহিলা সেখানেই মারা যান। তখন পুলিশও স্পটে এসে পৌঁছয়নি। কয়েকজন অটোওয়ালা ছিল। স্বামীর হাত-পা ভেঙে গিয়েছে। বাচ্চাটা ঠিক আছে। ঠাকুরের অশেষ কৃপা। এত জোরে ধাক্কা লাগে, বাচ্চাটা উড়ে গিয়ে এক অটোওয়ালার কোলে গিয়ে পড়ে। ওকে জাপটে বুকে নিয়ে নেয় অটোওয়ালা।”
দুর্ঘটনার পরও পুলিশি হয়রানির অভিযোগ উঠছে। দুর্ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে চার ঘণ্টা। কিন্তু এখনও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। ঘাতক বাসকে বাজেয়াপ্তও করা হয়নি বলে অভিযোগ।