কলকাতা: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ হেফাজত শেষে শনিবার আবারও আদালতে পেশ করা হয় দীপশেখর দত্ত ও মনোতোষ ঘোষকে। ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। অন্যদিকে এদিন এই দু’জনের নামে নতুন একটি ধারা দেয় কলকাতা পুলিশ। ৩৫৩ অর্থাৎ পুলিশকে কাজে বাধা দেওয়ার ধারা। পুলিশের বক্তব্য, ৯ অগস্ট অর্থাৎ ঘটনার দিন জয়দীপ ঘোষের সঙ্গে এই দু’জনও পুলিশি কাজে বাধা দেয়। এই ঘটনায় আবার আদালত ৩০ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
সরকারি আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, পুলিশি কাজে বাধা দেওয়ায় দীপশেখর, মনোতোষদের সঙ্গে আরও কয়েকজন যুক্ত। কারা তাঁরা, তা জানতে দীপশেখরদের জেরা করা দরকার। পুলিশি হেফাজতে সেই জেরার আবেদন জানায়। সেই আবেদনেই ৩০ তারিখ অবধি পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যেহেতু পুলিশ হেফাজতে জেরার দরকার, তাই আপাতত তাঁরা পুলিশ হেফাজতেই থাকবেন। পরবর্তী শুনানিতে ঠিক হবে আবারও পুলিশ হেফাজত নাকি জেল হেফাজতে পাঠানো হবে তাঁদের।
যাদবপুরকাণ্ডে মোট ১৩ ধৃতের তালিকায় নাম রয়েছে দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষের। মনোতোষ সমাজবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, অন্যদিকে দীপশেখর দত্ত অর্থনীতির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। শনিবার তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। এদিন ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় শুনানির শুরুতেই দীপশেখরের হাতের লেখা পরীক্ষার আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। কারণ, যে চিঠিটি উদ্ধার হয়েছিল, তা দীপশেখরের লেখা বলেই তদন্তে উঠে আসে। এরপরই পুলিশ নতুন ধারা যুক্ত করার কথা বলে।
তাতেই অভিযুক্তদের আইনজীবী পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, ‘এতদিন পুলিশের কি হুঁশ ছিল না? এখন ৩৫৩ ধারা যুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। এরা তো পুলিশ হেফাজতে ছিল। হায়ার অথরিটিকে সন্তুষ্ট করার জন্য এটা করছে।’
পাল্টা সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘এটা কিন্তু একটা খুনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটি মামলা। ওই ছাত্র হস্টেল থেকে পড়ে যাওয়ার পরে এরা পুলিশকে ঢুকতে দেয়নি, গেট বন্ধ করে রেখেছিল। হস্টেলের এক কর্মী বয়ানে বলেন, গেট বন্ধ করতে তাঁকে এরা বাধ্য করেছে। এই দু’টি ছেলে ছিল এবং এদের টিম কাজ করেছে।’
একইসঙ্গে সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘ঘটনার পর ১৪ দিন কেটে গেলেও ওরা কিছু বলেনি। বুঝতেই পারছেন বাচ্চার মতো কাজ এরা করেনি, পরিণতর মতো কাজ করেছে। এদের শ্যোন এরেস্ট করা হয়েছে। এদের সঙ্গে আরও অনেকে আছে। এটা জানতে হবে। এই দু’জন গেট বন্ধ করে রাখে, পুলিশকে হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেয়।’ এরপরই পুলিশ হেফাজত ও জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।