
কলকাতা: ফের বিতর্কে উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। ‘স্কুল অব ট্রপিক্যাল’ মেডিসিনে গিয়ে তৃণমূল বিধয়াকের বিরুদ্ধে উঠল দাদাগিরির অভিযোগ। বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন কাঞ্চন, বলে দাবি চিকিৎসকের। পরে বাকি রোগীরা প্রতিবাদ করায় বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন তৃণমূল বিধায়ক বলে দাবি। যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাঞ্চন। তাঁর দাবি, সামান্য প্রশ্ন করায় চিকিৎসক নিজের মেজাজ হারান। আর তারপর কাঞ্চন ও তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।
বুধবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের ঘটনা। এ দিন, শাশুড়িকে চিকিৎসা করাতে ট্রপিক্যালে যান কাঞ্চন। বিধায়কের দাবি ছিল, তাঁর শাশুড়িকে আগে দেখে দিতে হবে। ডাক্তার জানিয়েছিলেন,একটি শিশুকে তিনি দেখছেন। তাঁকে দেখে শাশুড়িকে দেখে দেবেন। অভিযোগ, এতেই চটে যান বিধায়ক। ডাক্তারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তিনি বলে দাবি। এটা দেখে আউটডোরে থাকা অন্য রোগীরা বেজায় রেগে যান। প্রতিবাদ জানান তাঁরা। মূলত অন্য রোগীর পরিজনদের প্রতিবাদ দেখেই ট্রপিক্যাল ছাড়েন কাঞ্চন।
সিনিয়র রেসিডেন্ট স্কুল অব ট্রপিক্যালের প্রণিত রায় বলেন, “ওরা স্যরকে চাপ দেন। এক্ষুনি দেখে দিতে হবে বারবার বলতে থাকেন। তারপর স্যর না শুনলে তাঁকে বলেন আপনার নাম কী? রেজিস্ট্রেশন নম্বর কী? আপনাকে ট্রান্সফার করে দেব বলে হুমকি দেন। এই ঘটনায় স্যর দুঃখ পেয়েছেন। ” ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোশিয়েশনের সদস্য দেবার্ঘ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, “কাঞ্চন মল্লিক এলেন ডাক্তার দেখালেন। উনি তো জনপ্রতিনিধি। এসে উল্টোপাল্টা কথা বলা শুরু করে দিলেন। গালিগালাজ করলেন HOD-কে আমরা সমর্থন করি না।” এ প্রসঙ্গে কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে টিভি ৯ বাংলা যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “শ্রীময়ীর দিদা আসানসোলে থাকেন ছিয়াশি বছর বয়স তাঁর। ওঁকে ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভর্তি করা হয়। তারপর উনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। মে মাসে ওঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ আসানসোল থেকে এসেছিলেন দেখাতে। আমি ওপিডিতে যাই শাশুড়ি ম্যাডামকে দেখাই। এরপর মেডিসিন ডিপার্টমেন্টে যাই। টিকিট করে দেখাই। তখন চিকিৎসক বললেন অপেক্ষা করুন। আমরা অপেক্ষা করলাম। এরপর ডাক্তারবাবুকে আমি বললাম ওঁর প্রেসার চেক করে দেবেন? উনি বলেন আপনি ঠিক করবেন? আমি কী দেখব না দেখব? আমার স্ত্রী আবার জিজ্ঞাসা করলেন যে দিদার ওষুধ চলবে না বন্ধ করব। সঙ্গে সঙ্গে উনিও চিৎকার করেন। আমিও স্বাভাবিক প্রশ্ন করি আপনি এমন ব্যবহার করি। আমি শুনলাম যে, বলা হচ্ছে হাতাহাতি হয়েছে। এগুলো সব ভিত্তিহীন অভিযোগ। পাশে বসা ডক্টর মিশ্র আবার আমায় বললেন থেমে যান যান…।” ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। হেনস্থার শিকার হওয়া চিকিৎসক মেহবাবুর রহমান বলেন, “আমি কোনও দুর্ব্যবহার করিনি। এই ঘটনায় খারাপ লেগেছ। আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। উনি কেন রেগেছেন আমি বুঝিনি। তবে ওঁর ব্যবহার খারাপ লেগেছে। ওঁর রোগী এসেছিলেন…আমি বুঝলাম না কেন রেগে গিয়েছে। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে এমন কথা বলা যায় না।” এসটিএম শুভাশিস কমল গুহ জানিয়েছেন তিনি স্বাস্থ্য দফতরে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন।