Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kargil War Museum: কার্গিল যুদ্ধের ২৫ বছরে উজ্জ্বল এক চন্দ্র

Kargil War Museum: কার্গিলের মিউজিয়াম সাজাতে হবে। সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সেই দায়িত্ব পান চন্দ্রনাথ দাস। ৮০০০ ফুট ওপরে সরযূ নদীর তীরে শহিদের স্মৃতিসৌধের পাশে মিউজিয়াম। কীভাবে সেই মিউজিয়াম সাজালেন চন্দ্রনাথবাবু। পড়ুন টিভি৯ বাংলার বিশেষ প্রতিবেদন...

Kargil War Museum: কার্গিল যুদ্ধের ২৫ বছরে উজ্জ্বল এক চন্দ্র
কার্গিল যুদ্ধের মিউজিয়াম চন্দ্রনাথ দাসের তত্ত্বাবধানে সেজে উঠেছে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2024 | 5:09 PM

প্রীতম দে

“কার্গিল সমাধির সামনে দাঁড়িয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। আর ভগবানকে বলেছি কী গুরুদায়িত্ব দিলে আমাকে। যেন এই অমর শহিদদের মান রাখতে পারি।”

না। কার্গিল যুদ্ধে অংশ নেননি ইনি। যুদ্ধ না করেও সবার মন জয় করে নিয়েছেন। কার্গিল যুদ্ধের মিউজিয়ামটি এই চন্দ্রনাথ দাসের তত্ত্বাবধানেই সেজে উঠেছে রজত জয়ন্তীর সাজে। এমন কী কৃতিত্ব রয়েছে চন্দ্রবাবুর যে তাঁকেই এক কথায় এই গুরুদায়িত্ব দিলেন সেনাকর্তারা?

সেকেন্ড ইন কমান্ড জিওসি , চিফ অফ দ্য আর্মি স্টাফ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তারা আগে থেকেই জানতেন চন্দ্রবাবুর মুন্সিয়ানার কথা। তাঁকে থিম দিতে বলেন। কার্গিল যাননি আগে কোনওদিন। পড়াশোনা করেন। বিভূতিভূষণও তো আফ্রিকা না গিয়েই শুধু বই পড়েই লিখেছিলেন চাঁদের পাহাড়। মনের মধ্যে সেই জোর রাখলেন। ফাইনালি পছন্দ হল ডেমো প্রজেক্ট। লেগে পড়লেন চন্দ্রবাবু পূর্ণিমার আলো ফোটানোর জন্য।

কার্গিলের মিউজিয়াম সুবর্ণজয়ন্তীর সাজে সাজালেন বাঙালি সন্তান চন্দ্রনাথ দাস

১৯৯৯ সাল। মে মাস। লাহোর চুক্তি গুলি মেরে ভারতের লাইন অফ কন্ট্রোল (এলওসি) ভাঙল পাক সেনা। শুরু হল কার্গিল যুদ্ধ। অপারেশন বিজয়। মে থেকে জুলাই । টানা তিন মাস ধরে হল কার্গিল যুদ্ধ। তারপর ২৬ জুলাই। যুদ্ধ জয়ের দিন। সেই
কার্গিলের ২৫ বছর। আর সেই জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে আমাদের বাংলার এক মানুষকে ডাকা হল। তাঁর কাজটাও ছিল একরকম যুদ্ধেরই মত।

চন্দ্রনাথবাবু অবসরপ্রাপ্ত কিউরেটর। তাঁকে ডাক দিলেন সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসাররা। কার্গিলের মিউজিয়ামটা সাজিয়ে দিতে হবে সুবর্ণজয়ন্তীর সাজে। ৮০০০ ফুট ওপরে সরযূ নদীর তীরে শহিদের স্মৃতিসৌধের পাশে মিউজিয়াম। আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন সেখানে পৌঁছেই। “শহিদের সমাধির কাছে দাঁড়াতেই অদ্ভুত অনুভূতি হল। নিজের দেশের জন্য কত তরুণ সেনা আত্মত্যাগ করেছেন। কত মা তাঁর ছেলেকে হারিয়েছেন। আজ সেই ঐতিহাসিক ঘটনা ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার দায়িত্ব আমার ওপর। পারব তো? এ যে গুরু দায়িত্ব।”, বলছেন শিল্পী।

সময় লেগেছে দীর্ঘ চারমাস। আগে কখনও কার্গিল যাননি। এবার যেতে হল। খুঁটিয়ে দেখলেন সব কিছু। তারপর ইতিহাস ঘাঁটলেন। গোলমাল বাধল অস্ত্র নিয়ে। কোন অস্ত্র কোথায় ব্যবহার হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে জানতে হবে। ১০০ শতাংশ নিশ্চিত না হয়ে তো চন্দ্রবাবু কিচ্ছু করবেন না। যেমন ভাবা তেমন কাজ। সোজসুজি কর্তৃপক্ষকে জানালেন। সেনা বাহিনীর একজনকে সর্বক্ষণের জন্য পাঠানো হল কলকাতায়, যিনি যে কোনও সন্দেহের নিরসন করতে পারবেন। ২৫ ফুট বাই ১০ ফুটের একটা বিশাল বড় কাজ। চন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে কাজ করলেন আরও সহযোগী শিল্পী। কার্গিল যুদ্ধের ২৫ বছরের বিশেষ স্মারক। কলকাতা থেকে অত বড় একটা ইনস্টলেশন নিয়ে যাওয়াটাও চাপের। কিন্তু কাজটা যখন সেনার তখন সেটাও সম্ভব। মিলিটারির গাড়ি ২৫ ফুট বাই ১০ ফুটের বিশাল আর্ট ওয়ার্ক নিয়ে সড়কপথে পৌঁছে গেল ৮০০০ ফুট উচ্চতায়।

“আমি অনেক কাজ করেছি। হিমালয়ের পুরো রেঞ্জের থ্রিডি মডেল করে বিশ্বরেকর্ড করেছি। দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি সৌন্দর্য এবং সেখানকার ঐতিহাসিক নিদর্শন বাড়ি চার্চ স্থাপত্য অনেককিছুই ধরে রেখেছি আমার রেখায় লেখায়। দুই মলাটের মধ্যে। কিন্তু কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল আমার জীবনেরও সেরা মেমরি হয়ে থাকল”, তৃপ্তির হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে বাঙালি চন্দ্রের মুখ।