কলকাতা: ইউনিট রয়েছে। রয়েছে পুলিশের প্রয়োজনীয় সামগ্রীও। তবু অনেক সময়ই তা হাতের কাছে পান না পুলিশ কর্মীরা। এমনও হয় অর্ডার দেওয়ার পর প্রায় এক মাস লেগে যায় তা পেতে। কারণ, সরকারি নিয়ম মেনে কোনও জিনিসের দরপত্রের মাধ্যমে তা উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের অনুমতি নিয়ে কিনতে গেলে সময় লেগেই যায়। এদিকে অন্য কোথাও স্টক থাকলেও কলকাতা পুলিশের এতই সামগ্রী যে, কোনটা কোথায় আছে তা যেন খুঁজে পাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে যায় এক এক সময়। এবার অনলাইনেই সে সব হিসাব রাখবে লালবাজার।
কলকাতা পুলিশের থানা-সহ প্রচুর ইউনিট বর্তমান থাকলেও দরকারি সামগ্রী কোনটা কোথায় তা জানা যায় না অনেক সময়। অন্যদিকে কোনও সামগ্রী একটি ইউনিটে না থাকলেও পাশের ইউনিটে তা আদৌও আছে কি না জানতে পারে না পুলিশই। এবার সব কিছুকে এক ছাতার তলায় আনার পরিকল্পনা করছে লালবাজার। ইতিমধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের নেতৃত্বে প্রতিটি ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে লালবাজারে।
মূলত সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, সব জিনিসের নম্বর দিয়ে আপলোড করতে হবে একটি নিদিষ্ট সাইটে। তাতে কোন থানায় কী কী সামগ্রী আছে বা বাড়তি সামগ্রী আদৌও আছে কি না তাও জানা যাবে মাউসে একটি ক্লিকেই। সমস্ত কিছুই সেখানে আপলোড করা থাকবে। নাম দেওয়া হবে কলকাতা পুলিশ ইনভেন্টরি সিস্টেম।
কীভাবে এই সিস্টেম কাজ করবে? ধরা যাক, কোনও থানার কোনও কাজে ২০০ লাঠি প্রয়োজন। অথচ সংশ্লিষ্ট সেই থানায় আছে ৫০টি লাঠি। অথচ আরেকটি থানায় ১৫০ লাঠি হয়ত রাখা আছে, যা দীর্ঘদিন ব্যবহারই হয় না। এক থানা খবর পাবে আরেক থানায় কত কী পুলিশি সামগ্রী রাখা আছে এই সিস্টেম চেক করলেই।
★ দ্রুত জানা যাবে কলকাতা পুলিশের কোন থানা বা ডিভিশনের অফিসে কী আছে
★ প্রয়োজন হলে নিকটবর্তী থানা বা অন্য ডিভিশনের থানা থেকে চাওয়া যেতে পারে
★ অফিসার বদলি হলেও নজর রাখতে কোন অসুবিধা হবে না
★ জিনিসটির ক্রয়ের দিন থেকে তার দাম সবই লেখা থাকবে
★ কেনাকাটার ঝক্কি কমবে কলকাতা পুলিশের
★ সব সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে কি না তা নজর রাখতে পারবে উচ্চপদস্থ কর্তারা
★ জিনিসের গুরুত্ব বুঝে কেনা যাবে বা যা আছে তার হিসাব দিয়ে আগাম আবেদন করতে সুবিধা হবে
পরীক্ষা মূলকভাবে কলকাতা পুলিশের ৯টি ডিভিশনের মধ্যে সাউথ সাবআর্বান ডিভিশন ও ৫ম ব্যাটেলিয়ন তা করায়, ফলও মিলেছে হাতেনাতে। এবার কলকাতা পুলিশের তরফে এই কাজ ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ করে ঘর গোছাতে চাইছে লালবাজার। প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই প্রশাসনিক বৈঠকে কর্তাদের সামনেই আর্থিক বঞ্চনা প্রসঙ্গ তুলে খরচ সামাল দেওয়ার কথা বলেছেন বিভিন্ন দফতরকে। এবার এই পদ্ধতিতে কলকাতা পুলিশের সব জিনিস ডিজিটাল রেকর্ডে থাকলে অর্থের অপচয় যেমন কমবে তেমন কলকাতা পুলিশের ভান্ডারে কিছুটা লাগামও দেওয়া যাবে বলে মনে করেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ।