কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সংখ্যালঘু-প্রীতি’ নিয়ে বারবার কটাক্ষ করে থাকেন বিরোধী দলের নেতারা। যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়মিত সংখ্যালঘুদের অনুষ্ঠানে যেতে দেখা যায়, তা নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য শোনা যায় নেতাদের মুখ থেকে। সেই প্রসঙ্গ তুলে সোমবার ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে সবাই ব্যঙ্গ করেন। বিজেপির লোকেরা তো আমার নামটাই পাল্টে দিয়েছেন।” তবে সে সব কথায় যে তিনি আমল দিচ্ছেন না, সেই বার্তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন সংখ্যালঘুদের।
রমজান মাসে রোজা ভঙ্গের সময় যে ইফতার হয়, সেখানে প্রতি বছরই যোগ দিতে দেখা যায় মমতাকে। সোমবার সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “আমাকে নিয়ে অনেকে কুৎসা করেছেন, অনেকে গালাগালি দিয়েছেন, রোজা তোলার সময় যখন, তখন তোলা ছবি নিয়ে সবাই ব্যঙ্গ করেন।” তাঁর কথায়, আমি কী করব, সেটা আমার ব্যাপার। শুধু তাই নয়, মমতার দাবি, আদিবাসী বা মতুয়াদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করেন না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কই আমি যখন আদিবাসীদের সঙ্গে নাচ করি তখন তো কেউ কিছু বলেন না, যখন মতুয়াদের উৎসবে ছুটি দিই, তখন তো কেউ এ কথা বলেন না। যখন রাজবংশী নেতা পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মালা দিই, তাতেও কেই কিছু বলেন না, যত রাগ আপনাদের এই সংখ্যালঘুদের ওপর!”
এদিনের বক্তব্যে মমতা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, ধর্মের ভিত্তিতে কোনও পার্থক্য করেন না তিনি। মমতা বলেন, আমি মন্দিরেও যাই, মসজিদেও যাই, দরগাতেও যাই। তাঁর কথায়, হিন্দু বলে কারও তিনটে চোখ আর মুসলিম বলে কারও চারটে চোখ থাকে না। রক্ত-মাংসে আসলে সবাই একই রকম মানুষ, এ কথা বিশ্বাস করেন মমতা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে, যখন সদ্য লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে, তখন সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, ‘যে গরু দুধ দেয়, তার লাথি খাওয়াও ভাল।’ ভোট পরবর্তী এক বৈঠকে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল এ কথা। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমি নাকি মুসলিম তোষণ করি! আমি ইফতারে যাচ্ছি। ১০০ বার যাব।’ মমতার সেই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।