কলকাতা: কালীঘাটের বাড়িতে আজ, শুক্রবার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সাগরদিঘির উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটদাতারা মুখ ফিরিয়েছিলেন তৃণমূলের থেকে। ভাঙড়েও সংখ্যালঘুদের বড় একটি অংশকে নিয়ে চিন্তিত শাসক দল। সাগরদিঘির হারের কারণ খতিয়ে দেখতে দলের পাঁচ সদস্যের সংখ্যালঘু নেতানেত্রীকে নিয়ে কমিটি গড়েন তৃণমূল নেত্রী। কমিটি আলোচনায় বসে পরাজয়ের ২৫টি কারণ বার করে। সাগরদিঘি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তেমন হলে আজকের বৈঠকে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে সেই রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে পরামর্শ এবং নির্দেশ দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী।
তৃণমূলের অন্দরেই কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, শীর্ষ নেতৃত্ব সকলেই তাকিয়ে রয়েছেন এই মেগা বৈঠকের দিকে। এটা আক্ষরিক অর্থেই তৃণমূলের কাছে মেগা শুক্রবার। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে শাসকদলের পরাজয় তৃণমূলকে নতুন করে ভাববার সুযোগ করে দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কারণ ওই এলাকায় ৬৫ শতাংশ ভোটব্যাঙ্কই সংখ্যালঘু। আর সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের ওপর প্রথম থেকেই দখলদারি ছিল শাসকদলেরই। অন্তত তেমনটাই মন রাজনৈতিক গবেষকদের। কিন্তু সেখানেই বাম-কংগ্রেস প্রার্থীর জয় ভাবাচ্ছে শাসকদলকে।
পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগে, প্রতিদিনই দলের ছোট বড় নেতাদের নাম জড়াচ্ছে। হাইকোর্টের চাপ বাড়ছে, চাপ বাড়ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, যা আদতে শাসকের কাছে মাটি দখলের লড়াই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শাসকদল কী স্ট্র্যাটেজি নেয়, সেটাই দেখার। কেষ্ট-হীন বীরভূমে কীভাবে এবার লড়বে তৃণমূল, তার পাঠও এদিন বাতলে দিতে পারেন নেত্রী। এক্ষেত্রে আরও একটি ফ্যাক্টর কাজ করছে, তা হল উত্তরবঙ্গ। যেখানে বিজেপি তার মাটি ধরে রেখেছে, সেখানে পঞ্চায়েতে কী নতুন কোনও স্ট্র্যাটেজি নেবে তৃণমূল, সেটাও দেখার রয়েছে এদিনের বৈঠকে।
সূত্রের খবর, এবার এলাকায় কাজের পারফরমেন্সের ভিত্তিতেই প্রার্থীর হওয়ার মাপকাঠি নির্ধারিত করা হবে। দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচি থেকে ইতিমধ্যেই জনসাধারণের অভাব অভিযোগ জেনেছে দল। গ্রামে অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে এখন থেকেই নেতাদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিতে পারেন নেত্রী। একাধিক প্রচারমূলক কর্মসূচির ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। গোটা বিষয় পর্যালোচনা করা হতে পারে এদিনের বৈঠকে। তৃণমূল অন্দরের খবর, সাগরদিঘির ফল থেকে আত্মসমালোচনা করেছে তৃণমূল। শিক্ষা নিয়ে লাগাতার মানুষের জন্য পরিষেবা ও পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী না হয়ে কীভাবে আরও জনসংযোগ বাড়ানো যায়, নতুন রণকৌশলের তীক্ষ্ণতা বাড়ানোর পাঠ দেবেন নেত্রী।