কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী হলে ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যটাকে বদলে দেবেন। বিধাননগরের EZCC-তে এবিভিপি-র একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে বলেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি, শিক্ষাব্যবস্থায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন। সেখানেই মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “৬ মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করলে আমি রাজ্যটাকে বদলে দেব।” প্রশ্নোত্তর পর্বে রাজ্যের বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে মুখ খোলেন মিঠুন। তিনি বলেন, “কোনও প্রজন্মকে শেষ করে দিতে হলে, আগে শিক্ষাব্যবস্থাকে শেষ করতে হয়। সেটাই হচ্ছে। বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান যা হাল, তাতে শ্মশানটা খুব কাছে। বাংলার পরিবর্তন সাধারণ মানুষই করতে পারবে।”
রাজ্যের শাসকদল বর্তমানে দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ। গত কয়েক মাসে রাজ্যে একাধিক ধর্ষণ, খুনের অভিযোগ উঠেছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত বুদ্ধিজীবীদের রাস্তায় নেমে মিছিলে হাঁটতে দেখা যেত। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ইস্যুতে তা দেখা যায়নি। বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা নিয়েও সরব হন মিঠুন। তিনি বলেন, “বাংলায় যখনই কোনও ঘটনা ঘটেছে আমরা কিন্তু জেগেছি। তার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু এখন আমরা প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি। কারণ যারা প্রতিবাদের ক্ষেত্রে সামনে সারিতে থাকেন, তাঁদের আত্মা বিক্রি হয়ে গেছে।” মিঠুন বলেন, “বর্তমান দুনীতি নিয়ে আমি প্রতিবাদ করতে চাই। এই বাংলা সেই বাংলা ছিল না। আমি এখনকার বাংলার প্রতিবাদ করছি। অনেক বাধা আসবে। তবুও প্রতিবাদ করতে হবে। আমিও তোমাদের সঙ্গে প্রতিবাদে আছি।”
রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মিঠুন বলেন, “সব রাজনৈতিক নেতাদের আজকের দিনে শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। যেভাবে বড় হয়েছি , এখন মিল খুঁজে পাই না।” এই অনুষ্ঠানে এক জনের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন মিঠুন। তিনি বলেন, ” একটা সময়ে আমার থাকার জায়গা ছিল না, তাই এক বন্ধু জিমে থাকার জায়গা দিয়েছিল। বাঁচার যদি ইচ্ছা থাকে, লড়াই আপনি এসে যায়।” তিনি বলেন, “একটা সময়ে আমার মনে হয়েছিল মরে যাব। তখন একটা সন্ধ্যায় একা বসে ভাবলাম। আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার মা-বাবা-বোনেদের কী হবে? বাঁচার ইচ্ছাটাই বড়। আমি জীবনে অনেক আঘাত পেয়েছি। আমি জানি আমি এখন একজন লেজেন্ডারি অভিনেতা। তবুও আপনারা জানতে চান তো, আমি কীভাবে মাটির মানুষ? আসলে এটা আমার পরিবারের শিক্ষা।”
সেই সঙ্গেই মিঠুন বলেন, “আমি ভাষণ দিতে পারি না । ডায়লগ দিতে পারি। সিনেমা করি তো। আমি নেতা নই। কর্মী।” বর্তমান রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক নেতাদের আজকের দিনে শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। রাজনীতি করা ভুল নয়। কিছু লোক এটিকে খারাপ করে দিয়েছে। উওমদার সঙ্গে কাজ করেছি । উওমদা বলতেন, রাজনীতিকে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে আনা উচিত নয়।”
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “১ দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করে দিলেন আপনি কী করবেন?” মিঠুন বলেন, “৬ মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করলে আমি রাজ্যটাকে বদলে দেব।”