AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Calcutta High Court: আদালতের নির্দেশে মা-হারা শিশুর অভিভাবকত্ব পেল প্রতিবেশী, বাবার সঙ্গে দেখা হবে মাঝে-মধ্যে

Calcutta High Court: শিশুর জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই আত্মঘাতী হন মা। তারপর থেকে জেলেই রয়েছেন বাবা। প্রতিবেশী এক মহিলাকেই দেওয়া হল ওই শিশুর অভিভাবকত্ব।

Calcutta High Court: আদালতের নির্দেশে মা-হারা শিশুর অভিভাবকত্ব পেল প্রতিবেশী, বাবার সঙ্গে দেখা হবে মাঝে-মধ্যে
অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। ফাইল চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Dec 13, 2021 | 2:29 PM
Share

কলকাতা : বাবা বা মায়ের মধ্যে কেউ একজন না থাকলে সাধারণত অভিভাবকত্ব পায় অপরজন। বাবা মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে আদালত খতিয়ে দেখে, কাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া সম্ভব। কিন্তু একটি মামলায় এক নজিরবিহীন নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মায়ের অবর্তমানে বাবাকে নয়, শিশুর অভিভাবকত্ব দেওয়া হল এক প্রতিবেশী মহিলাকে। শিশুর মায়ের বান্ধবী ওই মহিলাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মা আত্মঘাতী হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন বাবা। শিশুর অভিভাবকত্বের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। অভিভাবকত্ব না দেওয়া হলেও বাবার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে শিশুর বয়স সাড়ে চার বছর। ২০১৮ সালে শিশুর মা আত্মঘাতী হন। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ওই ঘটনার পরই শিশুর বাবা জেলে যান। এরপর থেকে দিদার কাছেই থাকত ওই শিশু। সম্প্রতি সন্তানের অভিভাবকত্বের দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হন বাবা। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিভাস পট্টনায়ক ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি।

ঠিক কী ঘটেছিল?

ওই শিশুর মা তার জন্মের কিছু পরেই আত্মঘাতী হন। সেই আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন তাঁর বাবা। এরপর থেকে ওই শিশু দিদা কাজল সাহার কাছে থাকত। পরে ওই শিশুর বাবা আদালতে আবেদন জানান, যাতে তাঁকে তাঁর সন্তানের অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়। আদালত সব দিক বিচার অভিভাবকত্ব দেয় দিদাকে। বলা হয় শিশুর ১৫ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত দিদার কাছে থাকবে সে। ১৫ বছর বয়সের পর, কার কাছে থাকবে সেই সিদ্ধান্ত সে নিজে নেবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিশুর বাবা। এরই মধ্যে ওই শিশুর দিদা আত্মহত্যা করেন। এই পরিস্থিতিতে শিশুর দেখাশোনার দায়িত্ব নেন তাঁদের এক প্রতিবেশীর তথা পারিবারিক বন্ধু জুলি রায়। ওই শিশুর মায়ের সঙ্গে জুলি রায়ের বন্ধুত্ব ছিল বলে জানা গিয়েছে।

আদালতে জুলি রায় নামে ওই মহিলা জানান, পরিবারের তেমন কেউ ছিল না বলেই শিশুর দায়িত্ব নেন তিনি। আরও জানা যায় যে শিশুর জন্মের পর থেকেই তার সঙ্গে ওই প্রতিবেশী মহিলার বেশ ভালো সম্পর্ক। সাড়ে চার বছরের ওই শিশু জুলির কাছে বেশ ভালোই থাকে। এ সব বিবেচনা করে আদালত জুলি রায়কে অভিভাবকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে বাবার সঙ্গে দেখা করার কথা বলা হয়েছে আদালতের তরফে। পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে যেহেতু বাবার সঙ্গে শিশুর স্বাভাবিক সম্পর্ক ছোট থেকে তৈরি হওয়া উচিৎ, সেই দিকটা বিবেচনা করেই বাবার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

পর্যবেক্ষণে কী বলা হয়েছে?

আদালত জানিয়েছে, যেহেতু জন্মের পর থেকেই ভালো সম্পর্ক, তাই জুলির কাছে  থাকতে অভ্যস্ত সে। আদালতের তরফেই উল্লেখ করা হয়েছে, যে হঠাৎ করে বাবার কাছে থাকতে শুরু করলে ওই শিশু অসুবিধায় পড়তে পারে। তাই মাঝে মাঝে দেখা করে শিশু ও তার বাবার সুসম্পর্ক তৈরি কথা বলেছে আদালত।

নভেম্বর মাসের দু’দিন সন্তানের সঙ্গে বাবা দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন। আদালতের নির্দেশে নভেম্বরের শেষে পরপর দুটি শনিবার তাঁদের দেখা  করতে বলা হয়। ২০ ও ২৭ নভেম্বর জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, জুলির বাড়ি থেকে সকাল ৯ টার সময় সন্তানকে নিয়ে গিয়ে আবার রাত ন’টার মধ্যে ফিরিয়ে দিতে হবে বাবাকে।

অন্যদিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসারকে ওই শিশুর সঙ্গে কথা বলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কোনও তরফের কেউ উপস্থিত থাকবে না, এমন জায়গায় কথা বলতে হবে ওই শিশুর সঙ্গে। কথা বলার পরে রিপোর্ট জমা দিতে হবে হাইকোর্টে। পরবর্তীতে ওই রিপোর্ট জমা দেবে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসার।

আরও পড়ুন : Omicron Variant: স্বাস্থ্য দফতরের হাতে এল ব্রিটেন ফেরত তরুণীর জিনোম সিকোয়েন্সিং রিপোর্ট!