
কলকাতা: কোলেস্টেরলের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। বয়স ৩০ ছুঁলেই বাসা বাঁধতে শুরু করে কোলেস্টেরল। একবার ধরা পড়লেই একে একে খাওয়া বন্ধ হয়ে যায় লোভনীয় সব খাবার। বিরিয়ানি, লুচি, পাঁঠার মাংস- সব খাবারেই বাড়ে সমস্যা। এই কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি দিতে আসছে এক নতুন ইঞ্জেকশন। একবার দিলে, সারাজীবন আর কোলেস্টেরল নিয়ে ভাবতে হবে না।
ইতালির একটি গবেষণা ঘিরে তোলপাড় চিকিৎসা মহল। জানা গিয়েছে, সেই ইঞ্জেকশন রোগীকে দেওয়া হলে সারাজীবন আর কোনও ওষুধ খেতে হবে না। এমনকী শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাও কখনও ছাড়িয়ে যাবে না। তবে কারা এই ইঞ্জেকশন নিতে পারবেন, তা স্পষ্ট করে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
বর্তমানে কারও শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তাঁকে ওষুধ দেওয়া হয়। যদি কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে বা জিনগত কারণে কোলেস্টেরল বাড়তে থাকে, সে ক্ষেত্রে বর্তমানে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ত্বকের নীচে সেই ইঞ্জেকশন নিতে হয়, যা নিলে অন্তত এক বছর কোনও ওষুধ খেতে হয় না। তবে নতুন ইঞ্জেকশনটি তার থেকে একেবারেই আলাদা। হাইপারকোলেস্টেরলমিয়ার ক্ষেত্রে এটি হবে বিশেষভাবে কার্যকরী।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তুষারকান্তি পাত্র জানিয়েছেন, সব রোগীকে এই ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে না। মূলত যাঁদের জিনগত সমস্যা আছে। কোনওভাবেই কোলেস্টেরল কমানো যাচ্ছে না, তাঁদের দেওয়া হবে এই ইঞ্জেকশন।
এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ড. সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন, মানুষের লিভারের উপরের কোষে এলডিএল রিসেপ্টর থাকে। সেটি খাবার থেকে আসা কোলেস্টেরল লিভারের মধ্যে পাঠিয়ে পরিপাক করে কোলেস্টেরল স্বাভাবিক মাত্রায় রাখে। সেখানে সমস্যা হলেই বাড়ে বিপত্তি। তিনি জানিয়েছেন, নতুন ইঞ্জেকশন বাজারে এলেও তা ১০,০০০ জন রোগীর মধ্যে ১০ জন পাবেন।
আপাতত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের উপর পরীক্ষা করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। এবার মানুষের শরীরে পরীক্ষা করার পরই বাজারে আসার ছাড়পত্র মিলবে। বাজারে এ ইঞ্জেকশনের দাম অন্তত ১ লক্ষ টাকা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।