
নদিয়া: একটা ঘটনা, নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। তীব্রতা এতটাই ছিল যে তাঁর আঁচ ভারতের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছতেও খুব একটা সময় লাগেনি। দশ বছর আগের কথা। ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ। রানাঘাটের গাংনাপুর থানার অন্তর্গত একটি গির্জায় চড়াও হয় এক দল দুষ্কৃতী।
প্রথমেই নিরাপত্তারক্ষীর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তারপর তাঁকে মারধর করে বেঁধে রেখে শুরু হয় তাণ্ডবের পরবর্তী পর্যায়। ওই ঘটনায় প্রতিটি সেকেন্ডের বিবরণ আজও নাড়া দেয় নদিয়া তথা বাংলার প্রতিটি মানুষের মনে। ওই গির্জায় ঢুকে সেই সময় প্রায় ১১ লক্ষ টাকা এবং সোনার গয়না চুরি করেছিল দুষ্কৃতীদের দল। প্রাথমিক ভাবে ডাকাতি মনে হলেও, এই ঘটনার ব্যাপ্তি ছিল ভিন্ন মাত্রার। টাকা হাতানোর পর দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়ে ওই গির্জার প্রধান সন্ন্যাসিনীর ঘরে। তারপর সেই বৃদ্ধার উপর চলে যৌন নির্যাতন এবং পরবর্তীতে ধর্ষণ। এই পৈশাচিক কাণ্ড ঘটিয়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
প্রথমে গাংনাপুর থানা, পরে সিআইডি ওই ঘটনার তদন্তে নামে। গ্রেফতার হয় ছয় অভিযুক্ত। বলে রাখা প্রয়োজন, এই গ্রেফতারি মোটেই সহজ ছিল না। ভারতের সীমানা পেরিয়ে দুষ্কৃতীদের খোঁজে প্রতিবেশী দেশ — বাংলাদেশে অভিযান চালিয়েছিলেন এ রাজ্য়ের গোয়েন্দারা। প্রতি মুহূর্তে টানটান উত্তেজনা। চোখের সামনে হাজার তথ্য, কিন্তু কোনটা সঠিক, কোনটাই বা চোখে ধুলো দেওয়ার ছক, বোঝা দায় ছিল। বাংলার গোয়েন্দাদের সেই রুদ্ধশ্বাস অভিযানের কথাই এবার লেখার হরফে ফুটে উঠল বইয়ের পাতায়। নাম ‘অপারেশন জয়বাংলা’।
শনিবার দীপ প্রকাশনের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছে এই নতুন বই। নদিয়ার সেই ধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনাকে দুই মলাটে তুলে ধরা হয়েছে এই বইয়ে। বইটির প্রতি পাতায় রয়েছে অতীত-বর্তমানের তথ্যের বিন্যাস এবং রহস্যভেদী তদন্তের কথা। সাংবাদিক তথা লেখক সপ্তর্ষি সোমের লেখা ‘অপারেশন জয়বাংলা’র — বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বর্তমান নগরপাল মনোজ ভার্মা।