Jadavpur University: যাদবপুর ‘আতঙ্কপুর’? মুখ্যমন্ত্রীর ‘অযাচিত’ খোঁচা ঘোর ‘বিপজ্জনক’ বলছে বামেরা, সমালোচনায় বিজেপিও
Mamata Banerjee on Jadavpur: সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, যাদবপুর ও যাদবপুরের পড়ুয়াদের যথেষ্ট মর্যাদা রয়েছে এবং কেউ কেউ সেই মর্যাদাহানির চেষ্টা করছেন। তাঁর অনুরোধ, 'দয়া করে মর্যাদাহানি করবেন না, দয়া করে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন না।'
কলকাতা: যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার সন্ধেয় বামেদের একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার নিশানায় কিছু ‘আগমার্কা সিপিএম’ যাঁরা গ্রামাঞ্চল থেকে আসা নতুন ছেলেমেয়েদের উপর অত্যাচার চালায়। সরাসরি বামেদের খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘কারা এরা? মার্ক্সবাদী। এখনও বড় বড় কথা।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দিতে পুলিশ ঢুকতে না দেওয়া বা সিসিটিভি লাগাতে না দেওয়া নিয়েও ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান দিনে ‘আতঙ্কপুর’ হয়ে গিয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি। যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে এভাবে বামেদের নিশানা করায় বেজায় চটেছেন সুজন চক্রবর্তীরা।
কড়া সমালোচনার সুরে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় হঠাৎ এতদিন পর মুখ্যমন্ত্রী কিছু অযাচিত মন্তব্য করেছেন, যা বিপজ্জনক।’ তাঁর বক্তব্য, যাদবপুরে পড়ুয়ার মৃত্যুর পর সারা বাংলায় ছাত্ররা প্রতিবাদ করছে। কিন্তু এখন যখন তদন্ত মাঝপথে, তখন মুখ্যমন্ত্রী কেন হঠাৎ এমন মন্তব্য করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন সুজনের। বলছেন, ‘তদন্তের মাঝখানেই উনি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন? এটা তো তদন্তকে প্রভাবিত করার একটা গভীর ষড়যন্ত্র। যেহেতু উনি বুঝতে পারছেন, ওনার বাহিনী ধরা পড়ে যাবে, তাই উনি তদন্তকে প্রভাবিত করার ষড়যন্ত্র করলেন? এটা কি কখনও চলে নাকি!’
সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, যাদবপুর ও যাদবপুরের পড়ুয়াদের যথেষ্ট মর্যাদা রয়েছে এবং কেউ কেউ সেই মর্যাদাহানির চেষ্টা করছেন। তাঁর অনুরোধ, ‘দয়া করে মর্যাদাহানি করবেন না, দয়া করে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন না।’
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর এসএফআই নেতা প্রতিকুর রহমানও মুখ খুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ‘ভুলভাল’ মন্তব্য করছেন বলেই মত প্রতিকুরের। একইসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী কেন এখনও মুখ খুলছেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন প্রতিকুরের। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৯ তারিখ ঘটনা ঘটল। আজ ১৪ তারিখ হঠাৎ রেজিস্ট্রার ক্যাম্পাসে এলেন। আজই প্রথম তৃণমূল ক্যাম্পাসের বাইরে মিটিং করল। আজই মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দিলেন। আজই ডাব্লুটিআই এসএফআইয়ের উপর হামলা করল। এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সব জায়গার তার এক জায়গায় জড়িত আছে।’
উল্লেখ্য, যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে ‘মার্ক্সবাদী’দের আক্রমণ করার সময় বিজেপির সঙ্গে তাদের আঁতাতের তত্ত্বও উসকে দিয়েছেন মমতা। সেই নিয়েও কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। মমতাকে পাল্টা দিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘এই টুকরে টুকরে গ্যাং, এই হোক কলরবের সঙ্গেই তো উনি ছিলেন। অতি বামেদের সঙ্গে নিয়েই তো পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত পালাবদল উনি করেছেন।’ একইসঙ্গে যাদবপুর ‘আতঙ্কপুরে’ পরিণত হওয়া নিয়ে মমতার মন্তব্য নিয়েও রাজ্য সরকারকেই বিঁধেছেন শমীক। বিজেপি মুখপাত্রর প্রশ্ন, ‘সরকারের ভূমিকা কী ছিল? হস্টেলে গাঁজা আসছে কোথা থেকে? সেটা দেখার দায়িত্ব কার? গোটা যাদবপুর চত্বরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দির বাইরে নজরদারি কারা করে? সে তো রাজ্যের পুলিশ। তারা ব্যর্থ কেন?’