রাজ্যে একদিনে বজ্রপাতে মৃত ২৭! ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা কেন্দ্র-রাজ্যের
রাজ্যে একদিনে বাজ পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়াল ২৬। হুগলিতে ১০ জন এবং মুর্শিদাবাজ জেলায় ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সোমবার রাজ্যজুড়ে একের পর এক বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য। দুঃখপ্রকাশ করে টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কলকাতা: রাজ্যে একদিনে বাজ পড়ে মৃত্যুর হল ২৭ জনের। হুগলিতে ১১ জন এবং মুর্শিদাবাজ জেলায় ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ২ জন করে মারা গিয়েছেন। বাঁকুড়া জেলায় বাজ পড়ে মারা গিয়েছেন ২ জন এবং নদিয়ায় একজন। এমন নজিরবিহীন দুঃখজনক ঘটনায় শোক প্রকাশ করে টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অপরদিকে আগামী দু’দিন মৃতদের বাড়িতে যাওয়ার কর্মসূচির কথা জানালেন তৃণমূলের নয়া সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের তরফে মৃতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী টুইটে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতে যাঁরা নিজের স্বজন হারালেন তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই। প্রার্থনা করি, আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যান।”
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বজ্রাঘাতে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
— Narendra Modi (@narendramodi) June 7, 2021
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইটে লেখেন, “বাংলার বিভিন্ন জায়গায় বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা ভীষণ দুঃখজনক। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমাবেদনা রইল। প্রার্থনা করি আহতরা দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন।”
The loss of lives due to lightning in different parts of West Bengal is deeply saddening. My sincerest condolences to the families of those who have lost their loved ones. Praying for the speedy recovery of those injured.
— Amit Shah (@AmitShah) June 7, 2021
প্রসঙ্গত, হুগলির পোলবা দাদপুর ব্লকের পোলবা থানার মহানাদের বাগানপাড়ার বাসিন্দা বছর ৩৯-এর হারুন আল রসিদের মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। বাজ পড়ে মারা গিয়েছেন দাদপুর থানার নবগ্রামের বাসিন্দা কিরন রায় (২৭), এছাড়া হরিপাল ব্লকের অযোধ্যার বাসিন্দা দিলীপ ঘোষ (৫০), সিঙ্গুর ব্লকের সিঙ্গুর থানার নসিবপুরের বাসিন্দা সুস্মিতা কোলে, তারকেশ্বর ব্লকের তারকেশ্বর থানার নৈটা পঞ্চায়েতের রসিদপুরের বাসিন্দা সঞ্জিত সামন্ত, খানাকুল ১ ব্লকের জগন্নাথপুরের বাসিন্দা শিশির অধিকারী (৬৭), বালিপুরের দম্পতি হেমন্ত গুছাইত (৪২), মালবিকা গুছাইত (৩৩) এবং গোবিন্দপুরের কানাই লাহিড়ির (৭৮) মৃত্যু হয়েছে। তারকেশ্বরের বাসিন্দা শৈল মালিকেরও মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। এক দিনে বাজ পড়ে এত সংখ্যক মৃত্যুতে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে জেলায়।
শুধু হুগলিতেই নয়, মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়েও এদিন মোট ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাজ পড়ে এক ব্যক্তির ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। অরুন মণ্ডল (৪০) নামে চন্দ্রকোনার জাড়া এলাকার ওই বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে মোট ২ জন এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২ জনের প্রাণ গিয়েছে বজ্রপাতে। অন্যদিকে নদিয়ার নবদ্বীপেও বাজ পড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
নবদ্বীপ থানার অন্তর্গত রানীর চড়া এলাকায় মৃত যুবকের নাম মধুসূদন দাস। বয়স আনুমানিক ছত্রিশ বছর। পেশায় ছুতোর মিস্ত্রি মধুসূদন এদিন বিকেলে রানি চড়া এলাকা সংলগ্ন ভাগীরথী নদীর ঘাটে স্নান করতে গিয়েছিলেন। হঠাৎই বজ্রপাত-সহ বৃষ্টি শুরু হলে একটি গাছের তলায় দাঁড়িয়ে পড়েন মধুসূদন। বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে গাছ তলাতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। রাজ্যজুড়ে এ পর্যন্ত বাজ পড়ে ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘অবশেষে ৪ মাস পর উনি শুনলেন’, তীর্যক সুরে কেন্দ্রের ফ্রি টিকাকরণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত মমতার