
কলকাতা: মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোরকে উল্টো করে ঝুলিয়ে ইলেকট্রিক শক। নারকীয়তায় শিউরে উঠছে বাংলা। ধরা পড়েছে মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচজন। কিন্তু, সন্তোষপুরের কারখানায় নির্যাতনের পর কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওই কিশোরকে? এখনও তার হদিশ পায়নি পুলিশ। ধৃত পাঁচজনের বয়ানে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ফলে কিশোরকে খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। এলাকার বিভিন্ন খাল, পুকুর, নদীতে বারবার তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি টিভি৯ বাংলা)। ভিডিয়োতে দেখা যায়, একটি কিশোরকে উল্টো করে ঝোলানো রয়েছে। মাঝে মাঝে তাকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, ঘটনাটি সন্তোষপুরের একটি জিনসের প্যান্ট রং করার কারখানার। মাস দেড়েক আগে এক পরিচিতের মাধ্যমে ওই কারখানায় কাজে এসেছিল বছর চোদ্দোর কিশোরটি। তার বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। কারখানার মালিকের মোবাইল চুরির সন্দেশে তাকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার দিন নাবালকের দাদাও অত্যাচারিত হয়। কিন্তু তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ কারখানার দুই কর্মীকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, কারখানার মালিক শাহেনশাহ পলাতক ছিলেন। গতকাল মুম্বই থেকে বছর আঠাশের এই যুবককে গ্রেফতার করে রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ। তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় আরও ২ জনকে। তার মধ্যে একজন শাহেনশাহর দাদা ফিরোজ আলম। অন্যজন তাদের নাবালক ভাগ্নে। জানা গিয়েছে, মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ধরে শাহেনশাহকে ধরা হয়েছে। পুলিশের চোখের ধুলো দিতে একাধিক ফোনের সুইচ অফ করে দিয়েছিল তারা। কিন্তু, একটি হাওড়া স্টেশনে একটি ফোন অন করেছিল। তাতেই লাইভ লোকেশনে দেখা যায়, অভিযুক্তরা ট্রেন ধরে পালাচ্ছে। শাহেনশাহ আগে ৭ বছর মুম্বইয়ে কাজ করেছেন। তাদের ধরতে রবীন্দ্রনগর থানার একটি দল মুম্বই যায়। রেলপুলিশের সাহায্য নিয়ে তিনজনকে ধরা হয়। ধৃত ৩ জনকে এদিন মুম্বইয়ের আদালতে তুলে আগামিকাল কলকাতায় আনা হবে।
এই মুহূর্তে পুলিশের প্রধান ভাবনা নির্যাতিত ওই কিশোরকে উদ্ধার করা। এই মুহূর্তে সে কোথায় রয়েছে, তা নিয়ে কোনও ক্লু পায়নি পুলিশ। তার সন্ধানে নানা জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এদিনও কারখানায় গিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা জানিয়েছে, মারধরের পর নাবালককে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে পাঁচজনের বয়ানে কোনও মিল নেই। নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ফলে নাবালকের খোঁজ পেতে কলকাতায় এনে শাহেনশাহ ফের জেরা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।