কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে ‘তিলোত্তমা’র যৌনাঙ্গে যে ক্ষত পাওয়া গিয়েছে, তাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ‘পেরিমর্টম’। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। আর এর যা অর্থ, তা বিশ্লেষণ করলে আরও শিউরে উঠতে হয়। ‘পেরিমর্টম’ অর্থাৎ জীবন ও মৃত্যুর মাঝামাঝি সময়ে ধর্ষণ! অর্থাৎ ‘তিলোত্তমাকে’ জীবন ও মৃত্যুর মাঝে, যে সময়ে তাঁর অঙ্গ কার্যত কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল, সেই সময়েই ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষার সময়ে ‘তিলোত্তমার’ যৌনাঙ্গে যে ধরনের আঘাত মিলেছে, তাকে বলা হয় ‘পেরিমর্টম’। আঘাত মূলত তিন ধরনের হয়। ‘অ্যান্টিমর্টম’, অর্থাৎ জীবিত অবস্থায় আঘাত, ‘পোস্টমর্টম’, অর্থাৎ মৃত্যুর পর শরীরে আঘাত, আর ‘পেরিমর্টম’ জীবন ও মৃত্যুর মাঝামাঝি সময়ে আঘাত। ‘তিলোত্তমা’র যৌনাঙ্গে ‘পেরিমর্টমের’ চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশও বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে। ধৃতর মোবাইল দেখে, ধৃতকে জেরা করেও যা তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে, তা শিউরে ওঠার মতো। ধৃত মোবাইলে অচিরাচরিত কিছু ‘পর্ন’ পাওয়া গিয়েছে, যা অত্যন্ত বিকৃত মানসিকতার পরিচয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ভোর চারটে নাগাদ চেস্ট মেডিসিনের সেমিনার রুমে ঢুকেছিলেন, তখন ঘুমোচ্ছিলেন ‘তিলোত্তমা’। আগে ‘তিলোত্তমা’র শরীরে বারেবারে আঘাত করেছে ধৃত। জেরা ও পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তিতে করে পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ধৃত প্রথমেই কম্বল সরিয়ে তিলোত্তমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সে সময়ে ‘তিলোত্তমা’ ঘুমোচ্ছিলেন। অতর্কিত এই পরিস্থিতিতে প্রথমে তিনি প্রতিরোধ করেন। ধৃতের বাঁ গালে তার চিহ্নও মেলে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গালে নখের আঁচড় ছিল। এরপর ধৃত ‘তিলোত্তমার’ গলা চেপে ধরেন। আরেক হাত দিয়ে ঘুষি মারতে থাকেন ‘তিলোত্তমার’ মুখে-পেটে-বুকে। যেহেতু ধৃত বক্সিং জানেন, তাই তাঁর শরীরের ক্ষমতার সঙ্গে পেরে ওঠেননি ‘তিলোত্তমা’। তারপর ‘তিলোত্তমা’ যখন নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলেন, তখন তাঁকে ‘ধর্ষণ’ করা হয়। অন্তত, তাঁর যৌনাঙ্গের ক্ষতচিহ্ন সে কথাই বলছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।