কলকাতা: ৯ অগস্ট চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর তড়িঘড়ি দাহ করার ব্যবস্থা করা হয়, এমন অভিযোগ একাধিকবার করেছেন তিলোত্তমার বাবা-মা। তাঁরা বলেছেন, পুলিশ কার্যত ঘিরে রেখেছিল তাঁদের বাড়ি। এমনকী নির্যাতিতার বাবার দাবি, সেই রাতে টালা থানাতেও উপস্থিত ছিলেন ৩০০-৪০০ পুলিশ। সেই রাতের ঘটনাক্রম প্রসঙ্গে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তিলোত্তমার বিশেষ বন্ধু।
TV9 বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিলোত্তমার বিশেষ বন্ধু তথা চিকিৎসক জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, তাই অনেক কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। তবে তাড়াহুড়ো যে হয়েছিল, সে কথা বলছেন তিনিও। তিনি জানান, সেই রাতে টালা থানায় এফআইআর করার সময় কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তিনি। তিলোত্তমার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন সেখানে। এক প্রতিবেশী এফআইআর লিখছিলেন।
সেই সময় তিনজন যুবক থানায় হাজির হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিলোত্তমার বিশেষ বন্ধু। তিনি বলেন, “তিনজন ছেলে এসেছিলেন থানায়। বলেছিলেন, ‘আরজি কর থেকে আসছি। এফআইআর-টা আমরা দেখতে চাই।’ আমার বন্ধুরা তাঁদের আটকায়। বলা হয়, এখন এফআইআর দেখা যাবে না। ওরা বলেছিল, আরজি কর থেকে সাহায্য করতে এসেছি। দীর্ঘ সময় বসেছিল টালা থানায়। আমরা চলে আসা পর্যন্ত তারা বসেছিল।” এই তিন যুবক কারা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে ওই চিকিৎসকের দাবি, বিষয়টা বিচারাধীন, তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করবেন না।
পাশাপাশি, তিনি দাবি করেন, ক্রাইম সিন সে দিন ঘিরে রাখা ছিল না। তিনি বলেন, “তখন কী ঘটছে, তা দেখতে পারিনি। পরে ছবি দেখেছি। তবে ক্রাইম সিন ঘেরা ছিল না। পুলিশ ছিল। আমি ভিতরে এক মিনিট চলে আসি।”
ময়নাতদন্তের সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিলোত্তমার বন্ধু। সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্ন উঠেছে, কেন সন্ধ্যার পর ময়নাতদন্ত হল? চিকিৎসক বন্ধু বলছেন, “আমার যতটুকু জ্ঞান তাতে, অন্ধকার হয়ে গেলে কালার চেঞ্জগুলো বোঝা যায় না। শরীরে বিষ থাকলে, যদি শরীরের বিশেষ অংশের রঙ পরিবর্তন হয়ে যায়, তাহলে তা ধরা যায় না। তাই সূর্যাস্তের পর ময়নাতদন্ত করা হয় না।” আপাতত বিচারের আশায় বসে আছেন তিনি।
খুন ও ধর্ষণের অভিযোগে এখনও পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিলোত্তমার বিশেষ বন্ধু তাঁর সম্পর্কে বলেন, “বাইরের মেডিক্যাল কলেজে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছি। তাই বলতে পারি, একেবারে বাইরের লোক হাসপাতালে ঢুকে এটা ঘটাবে, ভাবতে খুব আশ্চর্য লাগছে।”